চলতি সপ্তাহে ভারতের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা এক শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় প্রায় ৫৩ বিলিয়ন রুপি বা প্রায় ৭ হাজার ৩৭২ কোটি ৬৯ লাখ ৪০ হাজার ৭০০ টাকা সমমূল্যের ক্ষতি করেছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের খামার, রাস্তা এবং ভবনগুলো বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মন্থা গতা মঙ্গলবার রাতে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে আছড়ে পড়ে। এর ফলে ব্যাপক বৃষ্টি এবং ঝড়ো বাতাস বয়ে যায়। ফলে ফসল, বিদ্যুতের খুঁটি ও উপযোগিতা লাইনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করে, বহু গাছ উপড়ে ফেলে এবং বেশ কয়েকটি এলাকাকে ডুবিয়ে দেয়।
রাজ্য সরকারের প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব অনুযায়ী, কৃষি খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে; যার পরিমাণ ৮.৬৮ বিলিয়ন রুপি। সরকার আরও জানিয়েছে, এই ঝড়ে ১২০টি গবাদি পশু মারা গেছে।
যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু দাবি করেছেন, ঘূর্ণিঝড়ে কোনো মানুষের প্রাণহানি হয়নি, তবে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো দুইজন নারীর মৃত্যুর খবর দিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল বৃষ্টি প্রতিবেশী রাজ্য তেলেঙ্গানাতেও আঘাত হানে, যার ফলে বৃহস্পতিবারও বন্যা পরিস্থিতি বিদ্যমান ছিল।
নিউজ এজেন্সি এএনআই থেকে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষজন হাঁটু-সমান জলের মধ্যে দিয়ে উদ্ধার করা জিনিসপত্র হাতে বা মাথায় নিয়ে হেঁটে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে যাচ্ছেন। অন্য ছবিগুলোতে উদ্ধারকর্মীদের বন্যা কবলিত এলাকা থেকে বাসিন্দাদের টেনে তুলে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
ভারতের আবহাওয়া দফতর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি আরও দুর্বল হয়ে একটি নিম্নচাপ অঞ্চলে পরিণত হবে।
সাধারণত এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতের পূর্বাঞ্চলে প্রায়শই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। ১৯৯৯ সালে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওডিশায় আঘাত হানা এক প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় অন্তত ১০ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল, যা এখনও দেশের অন্যতম মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে পরিচিত।