ঢাকা: এখন থেকে সরকারে কর্মরত কোনো সচিব কিংবা সমগ্রেডভুক্ত কর্মকর্তা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান-পরিচালক পদে নিয়োগের জন্য বিবেচিত হবেন না। একই সঙ্গে স্বার্থের সংঘাত সংক্রান্ত কোনো বিষয় থাকলে ওই প্রার্থী নিয়োগের অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।
অতি সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত ‘রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং সরকারের শেয়ার রয়েছে এমন বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান/পরিচালক নিয়োগ নীতিমালা, ২০২৫’-এ এসব কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে গত ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল জারিকৃত নীতিমালাটি বাতিল করা হয়েছে।
চেয়ারম্যান/পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতা, দক্ষতা ওঅভিজ্ঞতাকে বিবেচনা করা হবে’ উল্লেখ করে নীতিমালায় বলা হয়েছে, অর্থনীতি-ফাইন্যান্স-ব্যাংকিং-আর্থিক বাজার-পুঁজিবাজার-মুদ্রানীতি-আর্থিক ব্যবস্থাপনা-ঋণ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা-কর্পোরেট গভর্ন্যান্স-ব্যবসায় শিক্ষা, ব্যবসায় প্রশাসন, কৃষি-শিল্প-আইন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তাদের বয়স হবে ৪৫ থেকে ৭৫ বছর পর্যন্ত। ১০ বছরের প্রশাসনিক বা ব্যবস্থাপনা বা পেশাগত অভিজ্ঞতা না থাকলে কেউই ব্যাংকের পর্ষদ সদস্য হতে পারবেন না। পর্ষদ সদস্যরা প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন কাজে অংশ নিতে পারবেন না। নিয়োগপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বছরভিত্তিক তাদের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করা হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, পরিচালনা পর্ষদে বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ অনুযায়ী, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হবে। পর্ষদে একজন চার্টার্ড অ্যাকাউট্যান্ট (সিএ) বা কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউট্যান্ট (সিএমএ), একজন আইনজ্ঞ এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত অভিজ্ঞ ব্যাংকার প্রতিনিধি থাকবে। এছাড়া পর্ষদে এক-তৃতীয়াংশ উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন নারী সদস্য রাখার বিষয় বিবেচনা করা হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, আর্থিক ও নৈতিকতার বিষয় যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করে চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের নিয়োগ দেওয়া হবে। ঋণখেলাপি ও করখেলাপি হলে এবং ফৌজদারি অপরাধ বা জালজালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ বা অন্য কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বা আছেন, এমন কেউ পর্ষদ সদস্য হতে পারবেন না।
এছাড়া দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলায় আদালতের রায়ে বিরূপ পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্য থাকলে এবং আর্থিক খাতসংশ্লিষ্ট কোনো সংস্থার বিধিমালা, প্রবিধান বা নিয়মাচার লঙ্ঘন করে দণ্ডিত হলেও পর্ষদ সদস্য হওয়া যাবে না। একটি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকতে কেউ অন্য কোনো ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না।
নীতিমালা অনুযায়ী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বাছাই কমিটি নাম চূড়ান্ত করবে। তবে বরাবরের মত সরকারের বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ পেশাজীবীদে নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে নীতিমালায়।চেয়ারম্যান নিয়োগের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান উপদেষ্টা। আর পরিচালক নিয়োগের চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন অর্থমন্ত্রী বা অর্থ উপদেষ্টা।