ঢাকা: জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপি যে পরিস্থিতি তৈরি করছে, সেটি অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগমুহূর্তে বিএনপির তৈরি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও উত্তাপ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে গণমাধ্যমে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপি নতুন করে যে পরিস্থিতি তৈরি করছে, সেটি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত এবং জনগণ ফেব্রুয়ারিতে যে একটি জাতীয় নির্বাচন চাচ্ছে, নির্বাচনের ঠিক আগে হঠাৎ এ রকম রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, উত্তাপ তৈরি করা ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে বলেই আমরা মনে করি। এ রকম অশুভ চক্রের কাছে প্রধান উপদেষ্টা নতি স্বীকার করবেন, বশ্যতা স্বীকার করবেন এবং ষড়যন্ত্রের কাছে নতি স্বীকার করে তিনি সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাবেন, এটি আমরা আশা করি না।’
এই সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অতীতেও একটি বিশেষ দলের প্রতি আনুগত্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল-বলে জামায়াতের এই নায়েবে আমির দাবি করেন। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা লন্ডন গিয়ে একটি অসম এবং অবৈধ চুক্তি ও একটি দলের চাপে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। সর্বশেষ উপদেষ্টা পরিষদে গৃহীত একটি দাবির (রাজনৈতিক দলের মার্কা ব্যবহার) সঙ্গে অন্য একটি দল দ্বিমত পোষণ করায় আবার সেটাকে পুনর্বিবেচনার নামে সেই দলটির প্রতি সরকার আনুগত্য প্রকাশ করেছে। এতে নিঃসন্দেহে সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়েছে।
জামায়াত এই সিদ্ধান্ত মানে না বলে জানিয়েছেন দলটির নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, ‘এর আগে নির্বাচন কমিশন এবং উপদেষ্টা পরিষদে প্রতিটি দল নিজ নিজ প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে বলে যে দুটি সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার সঙ্গে জামায়াত একমত, জাতিও একমত। জামায়াত গত উপদেষ্টা পরিষদে গৃহীত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে। অন্যথায় এর বিরুদ্ধে রাজপথে প্রতিবাদ হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘আমরা উনার (প্রধান উপদেষ্টা) কাছে এই আশাই করি যে সংস্কার, রিফর্ম ছিল উনারই নিজস্ব প্রোডাক্ট এবং তিনি তার এই সন্তানকে নিজ হাতে ছুরি দিয়ে হত্যা করবেন, এটি জাতি বিশ্বাস করে না। আর যদি এটাই প্রধান উপদেষ্টা করেন, তাহলে এটা জাতির সঙ্গে যে ওয়াদা তিনি করেছিলেন, সেই ওয়াদা তিনি ভঙ্গ এবং খেলাপ করবেন বলেই জাতি মনে করবে। আমরা আশা করি, তিনি দৃঢ় ভূমিকা পালন করবেন এবং সংস্কার বাস্তবায়নে তিনি যথার্থ এবং সঠিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।’