Sunday 02 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আইন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে বিএনপিকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ এনসিপির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:৫৩ | আপডেট: ২ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৪৮

জাতীয় নাগরিক পার্টি। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন নিয়ে বিএনপিকে ব্যক্তিগতভাবে সুবিধা দেওয়ার আশ্বাসের অভিযোগ তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ বিষয়ে সরকারের আনুষ্ঠানিক অবস্থান জানতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের কাছে চিঠি দিয়েছে দলটি।

রোববার (২ নভেম্বর) এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের সই করা ওই চিঠি আইন উপদেষ্টার দফতরে পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন নিয়ে বিএনপিকে ব্যক্তিগতভাবে আশ্বাস দেওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। একজন উপদেষ্টা হিসেবে আপনি রাষ্ট্রের নিরপেক্ষ আইন উপদেষ্টা—কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নন। নির্বাচনি আইন সংশোধনের মতো বিষয়ে কোনো একটি রাজনৈতিক দলকে এককভাবে আশ্বাস প্রদান করা অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা ও দায়বদ্ধতার পরিপন্থি।’

বিজ্ঞাপন

এনসিপি বলেছে, আইন সংশোধনের মতো বিষয় কোনো একক ব্যক্তির সিদ্ধান্ত হতে পারে না; এটি প্রাতিষ্ঠানিক, পরামর্শনির্ভর ও জনস্বার্থমূলক প্রক্রিয়া। তাই কোনো দলের দাবির সঙ্গে একমত হয়ে সরকারি পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া সরকারের প্রতি জনআস্থা দুর্বল করতে পারে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ২০ অনুচ্ছেদ বিষয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন, যা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থি।

চিঠিতে তিনটি কারণ দেখিয়ে সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে এনসিপি জানায়—

  • রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র, আর্থিক স্বচ্ছতা ও নীতিগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। কিন্তু নিবন্ধিত দল অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করলে নিবন্ধনের দায়বদ্ধতা হারায় এবং আইনি বৈপরীত্য তৈরি হয়।
  • গণতন্ত্রের মৌলিক নীতি হলো রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা। একাধিক নিবন্ধিত দল বড় দলের প্রতীকে নির্বাচন করলে ভোটার জানেন না কাকে ভোট দিচ্ছেন—এতে ভোটার-দায়বদ্ধতার সম্পর্ক নষ্ট হয়।
  • বর্তমান বিধান কৃত্রিম বহুদলীয়তা সৃষ্টি করে বড় দলগুলোকে কাঠামোগত সুবিধা দেয়। তারা ছোট প্রক্সি দল তৈরি করে নিজেদের প্রতীকে নির্বাচন করায়, যা জাতীয় ঐকমত্য ও মতের বৈচিত্র্য নষ্ট করে।

এনসিপি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত জানিয়ে বলেছে, ২০ অনুচ্ছেদে সংশোধন এনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে—কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে না।

দলটির মতে, যৌথ বা জোটনির্ভর প্রার্থী মনোনয়নের প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে নির্বাচন কমিশনের কাছে নিবন্ধন করতে হবে।

এনসিপির চিঠিতে আরও বলা হয়, এমন সংশোধন রাজনৈতিক বহুত্ববাদ সংকুচিত করবে না; বরং প্রকৃত গণতান্ত্রিক বহুত্ববাদকে শক্তিশালী করবে। এতে প্রতিটি দলকে নিজেদের নীতি, নেতৃত্ব ও দায় নিজেকেই বহন করতে হবে—যা ভোটারের অধিকার ও সাংবিধানিক ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক হবে।

সারাবাংলা/এফএন/এনজে
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর