Sunday 02 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন এসিড সন্ত্রাসের শিকার ক্ষতিগ্রস্ত নারীরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:৫৯ | আপডেট: ২ নভেম্বর ২০২৫ ২১:৪৮

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা, দিনাজপুর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ একসময় এসিড সন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য ভয়ঙ্কর প্রান্তিক অঞ্চলের নাম হলেও আজ সেই চিত্র বদলাচ্ছে। চার জেলায় সার্ভাইভাররা ধীরে ধীরে সেই অন্ধকার পেরিয়ে জীবনযুদ্ধে ফিরছেন। ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন, নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তুলছেন, হয়ে উঠছেন অন্যদের প্রেরণা।

রোববার (২ নভেম্বর) সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘সংগ্রাম থেকে সাফল্য: সেতু বন্ধনের সাহসী যাত্রা’ শীর্ষক সেতু বন্ধন গড়ি নেটওয়ার্ক জেলা সম্মেলনের আলোচনা সভায় উঠে আসে এই পরিবর্তনের গল্প।

এ্যাডিস সারভাইভরস নের্টওয়ার্ক এসবিজিএন এর আয়োজনে স্বদেশ ও একশন এইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় সম্মেলনে স্বদেশের নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্তের সঞ্চালনায় ও বিশিষ্ট্য সমাজ সেবক ডা: আবুল কালাম বাবলার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক সাইদুর রহমান মৃধা।

বিজ্ঞাপন

বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) শাহীনুর চৌধুরী, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) নাজমুন নাহার, জেলা তথ্য অফিসার জাহারুল ইসলাম, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যান ব্যানার্জি, এ্যাকশন এইড এর কো-অর্ডিনেটর নূরুন নাহার বেগম প্রমুখ।

এর আগে মিলনায়তনের বাইরে একটি র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে জেলার সার্ভাইভাররা, এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, স্থানীয় প্রশাসন ও নাগরিকরা অংশ নেন। র‌্যালীতে ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে সার্ভাইভাররা তাঁদের দাবি ও সচেতনতা তুলে ধরেন।

সভায় জানানো হয়, সাতক্ষীরায় মোট ১৬৪ জন সার্ভাইভার আছেন, যার মধ্যে ১১৬ জন নারী এবং ৪৮ জন পুরুষ। দিনাজপুর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ মিলিয়ে আরও শতাধিক সার্ভাইভার নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত। বক্তারা জানান, এই চার জেলায় সার্ভাইভাররা সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, আত্মকর্মসংস্থান এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগের মাধ্যমে নিজের জীবনে পরিবর্তন আনছেন। কেউ সেলাই বা বিউটি পার্লার চালাচ্ছেন, কেউ হাঁস-মুরগি ও সবজি চাষে নিয়োজিত, আবার কেউ ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করে নিজের পরিবারকে পরিচালনা করছেন।

বক্তারা জানান, স্বাস্থ্যসেবা এবং আইনি সহায়তা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে বার্ন ইউনিট না থাকার কারণে অনেক সার্ভাইভারকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য যেতে হয়। মামলার দীর্ঘসূত্রিতা এবং আইনি সহায়তার ঘাটতি ন্যায়বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছে। তবুও সার্ভাইভাররা সামাজিক স্বীকৃতি ও আত্মনির্ভরতার মাধ্যমে ধীরে ধীরে এগোচ্ছেন।

সভায় অংশ নেওয়া সার্ভাইভাররা জানান, আগের মতো তারা অবহেলিত বোধ করছেন না। পরিবার ও স্থানীয় সমাজের সহযোগিতায় তারা নিজের জীবন গড়ে তুলতে পারছেন। গঙ্গাদাসী, নুরুন্নাহার, ছফুরা খাতুনদের মতো অনেক সার্ভাইভার এখন হস্তশিল্প, ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং কৃষি উদ্যোগে স্বাবলম্বী।

সভা শেষে জেলা প্রশাসক, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও এনজিও প্রতিনিধি সার্ভাইভারদের জন্য স্থায়ী তহবিল, প্রশিক্ষণ এবং পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপনের আশ্বাস দেন।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর