ঢাকা: দেশে ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বিতীয় দফা আহবানে ১২টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। বর্ধিত সময়সীমা অনুযায়ী, রোববার (০২ নভেম্বর) ছিল আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, যেসব প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের জন্য আবেদন করেছে, সেগুলো হলো– ব্রিটিশ বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, ডিজিটাল ব্যাংকিং অব ভুটান-ডিকে, আমার ডিজিটাল ব্যাংক-২২ এমএফআই, ৩৬ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, বুস্ট-রবি, আমার ব্যাংক (প্রস্তাবিত), অ্যাপ ব্যাংক-ফার্মারস, নোভা ডিজিটাল ব্যাংক-বাংলালিংক অ্যান্ড স্কয়ার, মৈত্রী ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, উপকারী ডিজিটাল ব্যাংক, মুনাফা ইসলামী ডিজিটাল ব্যাংক-আকিজ ও বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক।
ডিজিটাল ব্যাংকিং হলো অনলাইন ব্যাংকিংয়ের একটি বৃহত্তর অংশ, যেখানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৩ সালে প্রথমবার ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় ‘ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপন বিষয়ক গাইডলাইন্স, ভার্সন-১’ অনুসরণ করা হয়েছিল। নতুন করে দ্বিতীয় দফা লাইসেন্স প্রদানের লক্ষ্যে
‘ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপন বিষয়ক গাইডলাইন্স, ভার্সন-২’ শীর্ষক নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আওতায় গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্সের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু করা হয়। শুরুতে আবেদন জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ৩০ সেপ্টেম্বর। পরে সময়সীমা বাড়িয়ে ২ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, নতুন গাইডলাইনে পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ বিদ্যমান ১২৫ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি উদ্যোক্তা/স্পন্সর এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার যোগ্যতা ও উপযুক্ততার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিবর্তন আনা হয়েছে। এছাড়া ডিজিটাল ব্যাংকের পরিচালনা ও সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। পেমেন্ট সার্ভিস পরিচালিত হবে ২০১৪ সালের বাংলাদেশ পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেম রেগুলেশনের অধীনে।
নতুন বিধান অনুযায়ী, অনুমোদন প্রাপ্তির ৫ বছরের মধ্যে প্রতিটি ডিজিটাল ব্যাংক প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) আনতে হবে। আইপিও’র পরিমাণ অবশ্যই উদ্যোক্তাদের প্রাথমিক বিনিয়োগের ন্যূনতম সমান হতে হবে।
ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনার জন্য একটি প্রধান কার্যালয় থাকবে এবং তবে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি হবে স্থাপনাবিহীন। অর্থাৎ এই ব্যাংক কোনো ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) সেবা দেবে না। ডিজিটাল ব্যাংকের নিজস্ব কোনো শাখা বা উপশাখা, এটিএম, সিডিএম অথবা সিআরএমও ইত্যাদি থাকবে না। সব সেবাই হবে অ্যাপ-নির্ভর, মুঠোফোন বা ডিজিটাল যন্ত্রের মাধ্যমে।
ডিজিটাল ব্যাংকে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই সেবা দেওয়া হবে। গ্রাহকদের লেনদেনের সুবিধার্থে ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড ও অন্যান্য প্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য দেওয়ার সুযোগ থাকবে। তবে লেনদেনের জন্য কোনো প্লাস্টিক কার্ড দেওয়া হবে না। গ্রাহকরা অন্য ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও এজেন্ট সেবা ব্যবহার করতে পারবে। ডিজিটাল ব্যাংক কোনো ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারবে না। বড় ও মাঝারি শিল্পে কোনো ঋণ দেওয়া যাবে না, শুধু ছোট ঋণ দেওয়ার সুযোগ থাকবে।