Tuesday 04 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভালো রাজনৈতিক সংস্কৃতি সুযোগ বাড়িয়ে দেয়: নরওয়ের রাষ্ট্রদূত

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট
৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:০৪ | আপডেট: ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৩

-ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হিকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন বলেছেন, রাজনীতি ব্যক্তিগত নয়, এটি নাগরিক সেবা বিবেচনা করে নরওয়েতে নির্বাচনকালে প্রতিযোগী প্রার্থীর প্রচারণার সময় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা হয়। আগামীর বাংলাদেশেও অপার সম্ভাবনা রয়েছে। ভালো রাজনৈতিক সংস্কৃতি সবসময় বাংলাদেশের সুযোগ বাড়িয়ে দেবে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকার নরওয়ে দূতাবাসের সহায়তায় ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সুরাজনৈতিক সংস্কৃতির অন্বেষণ’ শীর্ষক ঢাকা ট্রিবিউন সেমিনারটির আয়োজন করে। এটি সঞ্চালনা করছেন ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ।

বিজ্ঞাপন

সেমিনারের শুরুতে হিকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক উত্তরণের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যাপক সংস্কারের কাজ হাতে নিয়েছে। সরকার কয়েকটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, যারা বেশ কিছু সংস্কার সুপারিশ করেছে। কিছু সংস্কার কাজ ইতোমধ্যে করা হয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সরকার আরও সংস্কার কাজ করবে। এসব সংস্কারের বাইরে আরেকটি বিষয়ে সংস্কারের কথা ভেবে দেখতে হবে, সেটা হচ্ছে রাজনৈতিক সংস্কৃতি। ভালো রাজনৈতিক সংস্কৃতি ছাড়া বিগত কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রবণতা, সাংঘর্ষিক রাজনীতি, রাজনৈতিক নিপীড়ন, দুর্নীতির পুনরাবৃত্তি ঘটবে।’

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর বিশেষ ফেলো ড. রওনক জাহান বলেন, বর্তমানে বেশ কিছু সংস্কার প্রস্তাব হাতে নিলেও বাস্তবায়ন করতে বেশ কিছু সময় লাগবে। বর্তমানে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মতো বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে বাদ দিয়ে সংস্কারকে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ফলে আগামীতে তারাও এটি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান বলেন, ইউরোপ এবং আমেরিকার ডানপন্থি রাজনীতিতে কিছুটা হলেও অভিবাসীদের দিকে মনোনিবেশ করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এটি ধর্মের ওপর ভিত্তি করে হবে, কারণ ভারতে এটি ধর্মের ওপর ভিত্তি করে হচ্ছে। সুতরাং এই ধর্মভিত্তিক রাজনীতি মারাত্মকভাবে উদ্বেগজনক হবে এবং ৫ আগস্টের পর আমরা এখানে এ ধরনের কিছু লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি। সুতরাং আমি এতটা আশাবাদী নই যে, আমরা ভবিষ্যতে কিছু ভাল রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি করতে সক্ষম হবো।

তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমার অনেক আলোচনায় বক্তব্যগুলোতে, আমি মানুষকে খুব বেশি প্রত্যাশা না করার জন্য সতর্ক করার চেষ্টা করেছি। গত ১৫ বছরে আমরা কিছু গুরুতর কর্তৃত্ববাদী শাসনের অধীনে ছিলাম, আমি এটিকে ফ্যাসিস্ট বলি না, আমার বিবেচনায় তিনি খুব কমই ফ্যাসিবাদী ছিলেন, ২০১৮ এবং তার পরে এটি একটি মাফিয়া শাসনের ক্লাসিক উদাহরণ হয়ে ওঠে। ২০১৮ সালের পরে সেই দলের কোনও আখ্যান ছিল না, যা ফ্যাসিবাদী শাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তারা কেবল পাশবিক শক্তি প্রয়োগ করেছিল এবং কিছু গুণ্ডা ক্ষমতায় ছিল। তারা তাদের সংগঠিত অপরাধের জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছিল। সুতরাং এটি একটি মাফিয়া শাসন ছিল। সুতরাং আমরা কমপক্ষে ৫ বছর মাফিয়া শাসনের অধীনে বাস করেছি এবং তার আগে আরও ৫ বছর ফ্যাসিবাদী শাসনের অধীনে বাস করেছি।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সদস্য, আইনজীবী শিশির মনির বলেছেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক শক্তিগুলো বড় জায়গা দখল করে আছে। এখানে পুরোটা সমাজে রাজনীতি এবং জীবিকা এক করে দেখা হয়ে থাকে। যেখানে একটি ধারনা রয়েছে রাজনীতির নেতৃত্বে থাকলে বা পদে থাকলে অর্থ আয় করা সম্ভব বা সহজ হয়। এই ধারনা থেকে বেরোতে না পারলে রাজনীতির সংস্কার করা কঠিন। আর এটি করতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। আমরা আশাবাদী হতে চাই।

সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. মির্জা এম হাসান, ঢাকা ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালেটিকসের (দায়রা) গবেষণা পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সাংবাদিক জাইমা ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ এম শাহান, নাগরিক কোয়ালিশনের সদস্য ফাহিম মাশরুর।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর