নীলফামারী: চীন সরকারের অনুদানে এক হাজার শয্যার ‘Bangladesh-China Friendship General Hospital’ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে নীলফামারীতে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফাতিমা-তুজ-জোহরা ঠাকুরের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ৩০ অক্টোবর মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারিকৃত এ নোটিশটি জরুরি হিসেবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
চীন সরকারের উপহারের এই হাসপাতাল স্থাপন নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া থাকলেও মন্ত্রণালয়ের এমন নোটিশে খুশি নীলফামারীর মানুষ।
এদিকে, গত ২২ এপ্রিল হাসপাতাল স্থাপনের উপযুক্ত স্থান নির্ধারণে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. হারুন অর রশিদ নীলফামারী পরিদর্শন করেছেন। তিনি প্রস্তাবিত স্থানের অবকাঠামোগত সম্ভাবনা, যাতায়াত ব্যবস্থা এবং ভূমি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন।
চীন সরকারের অনুদানে নির্মিত এই হাসপাতাল চালু হলে নীলফামারীসহ উত্তরাঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। আধুনিক সরঞ্জাম ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে স্থানীয়রা রাজধানীতে না গিয়েই উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
চীন সরকারের হাসপাতাল স্থাপনে নীলফামারীকে নির্বাচন করায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও নীলফামারী-২ আসনে বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী এএইচএম সাইফুল্লাহ রুবেল।
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালটির ফলে এলাকার স্বাস্থ্য সেবার মান যেমন বাড়বে, তেমনি অর্থনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থানে দাঁড়াবে। উন্নত চিকিৎসা নিতে এখন আর দেশের বাহিরে যেতে হবে না।’
সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও নীলফামারী-০২ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট আল ফারুক আব্দুল লতিফ। তিনি বলেন, ‘নীলফামারীর মানুষ আজ গর্ববোধ করছে। এতবড় একটি হাসপাতাল বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে এই জেলার। হাসপাতালটির ফলে নীলফামারীতে বিভিন্ন এলাকার মানুষরা চিকিৎসা নিতে আসবেন।’
নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সাবেক সভাপতি সোহেল পারভেজ বলেন, ‘চীন সরকারের হাসপাতাল স্থাপন নিয়ে সরকারের সিলেকশন যথাযথ। টেক্সটাইল মাঠ সবদিক থেকে এগিয়ে অন্যান্য জায়গাগুলোর চেয়ে। সকল সুযোগ সুবিধা পাবে হাসপাতালটি স্থাপনের ক্ষেত্রে। ব্যবসায়িকভাবে আরও সমৃদ্ধ হলো আমাদের জেলা।’
গণপুর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাকিউজ্জামান বলেন, ‘চিঠিটি আমরা পেয়েছি। এক হাজার শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল স্থাপন বিষয়ে আমরা ডিজিটাল সার্ভে শুরু করেছি। গণপুর্ত বিভাগ এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, ‘টেক্সটাইল এলাকায় ৬০ একরেরও বেশি সরকারি জায়গা রয়েছে। চীন সরকারের এক হাজার হাসপাতাল স্থাপনে ২৫ একর জায়গা প্রয়োজন। ২৫ একর জায়গা হাসপাতালের জন্য দিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, নিজ এলাকায় এই হাসপাতালটি চেয়ে আন্দোলন হয়েছে রংপুরসহ কয়েকটি জেলায়।