Tuesday 04 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খেলাপি বৃদ্ধির নেপথ্যে ইন্সপেকশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আইএমএফের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৪ নভেম্বর ২০২৫ ২১:৩৬ | আপডেট: ৪ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:৫০

-ছবি : প্রতীকী

ঢাকা: পতিত লীগ সরকারের সুবিধাভোগী বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলম, সালমান এফ রহমান, নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ ব্যাংক লুটেরাদের অনিয়ম ছিল ওপেন সিক্রেট। তাদের লুটের সময় বিশাল অঙ্কের খেলাপি ঋণ গোপন করে নিয়মিত দেখানো হতো। কোনো ইন্সপেক্টর অনিয়ম নিয়ে প্রকৃত সত্য প্রতিবেদন দিতে পারতেন না। যা সরকারের পালাবদলের পর বের হয়ে আসছে। কিন্তু খেলাপি ঋণ কীভাবে গোপন রাখা হতো এবং কেন ব্যাংক পরিদর্শনে ধরা পড়েনি- এমন প্রশ্ন ঢাকার সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মিশন সদস্যদের। তারা ব্যাংক পরিদর্শনের ত্রুটি আছে কি না- সেদিকে কড়া নজর রাখছে। এ সময় সেসব কর্মকর্তা বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক পরিদর্শন করেছেন তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠককালে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির নেপথ্যে এসব কর্মকর্তার ভূমিকা ও আইনি ত্রুটির বিষয়ে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানানো হয় বলে সূত্র জানায়।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সদর দফতরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র, ব্যাংক খাতের তারল্য সংকট এ খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। আইএমফ’র সদস্যরা জানায়, আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির শর্ত অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আর প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টো চিত্রই দেখা যাচ্ছে। সরকার পরিবর্তনের পর গোপন করে রাখা প্রকৃত খেলাপি ঋণের তথ্য প্রকাশ পেলে দেখা যায়, মাত্র এক বছরে খেলাপির পরিমাণ প্রায় চার লাখ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকায়। সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি হার ৪০ শতাংশ ছাড়িয়েছে, আর বেসরকারি খাতেও খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের ওপরে পৌঁছেছে।

সূত্র জানায়, ব্যাংকে খেলাপি ঋণ গোপন করাটা রহস্যজনক। এটা ব্যাংকিং নিয়মে হতে পারে না। হয় সিস্টেমে দুর্বলতা বা কোনো কারচুপি রয়েছে। তা না হলে যারা ব্যাংক ইন্সপেকশন করেছেন, তারা দায়সারা পরিদর্শন করেছেন। প্রকৃত কারণ খুঁজে দ্রুত আইএমএফের জানাতে বলেছে সংস্থাটি সদস্যরা।

সূত্র জানায়, আইএমএফ প্রতিনিধি দলের মতে এই খেলাপি প্রবণতা শুধু আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্যই নয়, বিনিয়োগ প্রবাহ এবং সামষ্টিক অর্থনীতির জন্যও বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। তারা ব্যাংকগুলোর পুনঃমূলধন, প্রভিশন ঘাটতি এবং তারল্য সংকটের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য চান। একই সঙ্গে জানতে চান, এই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কম ধরনের নীতিমালা অনুসরণ করছে। খেলাপি নিয়ে সংস্থাটি নীতিগত ব্যাখ্যা ও স্বচ্ছ হিসাব দেখানোর অনুরোধ জানায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিগত সরকারের আমলে কোনো ইন্সপেকশন ঠিকভাবে হয়নি। কিছু অনিয়ম ধরতে গেলে চাকরি হারানোর ঝুঁকি থাকত। নতুন গভর্নর থেকে নির্বাহী পরিচালক কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়তে হতো। পরে তোষামুদে কর্মকর্তাদের ইনফেকশন পাঠানো হতো ওপরের নির্দেশে। সেই সংস্কৃতি এখনো পুরোপুরি দূর হয়নি।

সারাবাংলা/এসএ/এসআর
বিজ্ঞাপন

বগুড়ায় ৩৯টি ককটেল উদ্ধার
৪ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:২২

আরো

সম্পর্কিত খবর