ঢাকা: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নয় মাসের ধারাবাহিক আলোচনায় কোনো কার্যকর ফল আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, দীর্ঘ আলোচনার পরও সাধারণ ভোটাররা কোনো বাস্তব ফলাফল দেখতে পাচ্ছে না। বরং, পুরো প্রক্রিয়ার যৌক্তিকতাই এখন প্রশ্নের মুখে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বিডিবিএল ভবনে ‘প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫: নাগরিক প্রত্যাশা ও জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।
শামা ওবায়েদ বলেন, “নয় মাস ধরে বিএনপি, এনসিপি, জামায়াতসহ সব রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিল। কিন্তু আল্টিমেট রেজাল্টটা কী? আলী রীয়াজ সাহেবের দেশত্যাগ আর আসিফ নজরুলের ‘ঐক্য-টৈক্য তো হয় নাই’ মন্তব্যই প্রমাণ করে যে ঐকমত্য আদৌ হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, ‘বৃষ্টির মধ্যে ছাতা ধরে সবাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে গেল। জাতীয় সনদে স্বাক্ষর হলো, ছবি তোলা হলো। তাহলে প্রশ্ন জাগে— ঐকমত্য কমিশনের প্রয়োজনটা কী ছিল?’
তিনি দাবি করেন, “জনগণ এখন এগিয়ে আছে, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো পিছিয়ে পড়েছে। ভোটাররা ভোট দিতে চায়। কারণ, গত ১৭ বছর তারা ভোট দিতে পারেনি। অথচ ‘জুলাই সনদে কী লেখা আছে’ বা ‘গণভোটে কী কী থাকবে’- তা সাধারণ ভোটার জানেন না।”
তার মতে, নভেম্বর মাসে গণভোট আয়োজনের যে পরিকল্পনা চলছে, তা বাস্তবসম্মত নয়। ‘ভোটারদের অন্তত ছয় মাস শেখাতে হবে তারা কোন বিষয়ে ভোট দেবে। গণভোট মানে শুধু ‘হ্যাঁ-না’ বলা নয়; বিষয়টি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার’- যোগ করেন শামা ওবায়েদ।
গণতন্ত্র ও সংস্কার নিয়ে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র চাইলে ওভারনাইট সংস্কার আনা যায় না। সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। সবাই একমত হবে না, কিন্তু সেটিই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা। বিশেষ করে উচ্চকক্ষের মনোনয়ন ও সদস্য বাছাই প্রক্রিয়ায় দলগুলোকে দায়িত্বশীল হতে হবে।’ পিআর সিস্টেমের বিরোধিতা এখন থাকলেও ভবিষ্যতে তা বাস্তবায়ন অসম্ভব নয় বলেও মত দেন তিনি।