Wednesday 05 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানির উত্থান যেভাবে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:০৫ | আপডেট: ৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:১০

নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি। ছবি: সংগৃহীত

মাত্র এক বছর আগেও জোহরান মামদানি ছিলেন প্রায় অপরিচিত একটি নাম। আজ তিনি নিউইয়র্ক সিটির ৩৪ বছর বয়সী প্রথম মুসলিম মেয়র। সমাজতান্ত্রিক রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী ও তৃণমূলভিত্তিক প্রচারের মাধ্যমে ‘লং শট’ প্রার্থী থেকে মূলধারার রাজনীতির কেন্দ্রে উঠে এসেছেন তিনি।

সামাজিক মাধ্যমে মামদানির ভাইরাল ভিডিওগুলো—’হালালফ্লেশন’ শব্দ চালু করা, ভাড়া স্থগিতের প্রতিশ্রুতির পর সমুদ্রের ঠান্ডা ঢেউয়ে ঝাঁপ, কিংবা নিউইয়র্ক ম্যারাথনে দৌড়াতে দৌড়াতে বাড়তি ভাড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ—সবই তার নির্বাচনি প্রচারনায় ভূমিকা রেখেছে।

এদিকে মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন প্রাক্তন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো কর্পোরেট সমর্থনে শক্তিশালী হলেও জনগণের সমর্থনে পিছিয়ে থাকা এক প্রার্থী। তাদের প্রচারযুদ্ধ কার্যত ডেমোক্র্যাটিক দলের দুই ভিন্ন আদর্শিক ধারাকে সামনে এনে দেয়। একদিকে কেন্দ্রপন্থী নেতৃত্ব, অন্যদিকে পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে তরুণ প্রগতিশীল মুখ। নিউইয়র্ক অবশেষে বেছে নিয়েছে দ্বিতীয় পক্ষকে।

বিজ্ঞাপন

মামদানির জন্ম উগান্ডার কাম্পালায়। সাত বছর বয়সে পরিবারসহ নিউইয়র্কে আসেন। তার মা বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা, বাবা কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ব্রঙ্কস সায়েন্স হাইস্কুলে পড়াকালেই তিনি স্কুলের প্রথম ক্রিকেট দল গঠন করেন। পরে বোডউইন কলেজে আফ্রিকানা স্টাডিজে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং সেখানে ‘স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন’ অধ্যায় প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৮ সালে তিনি মার্কিন নাগরিকত্ব পান।

আরও পড়ুন- নিউইয়র্কের নেতৃত্বে প্রথম মুসলিম মেয়র মামদানি

কমিউনিটি সংগঠক এবং ফোরক্লোজার প্রতিরোধ কাউন্সেলর হিসেবে কাজ করার পর ২০২০ সালে নিউইয়র্কের ৩৬ নম্বর জেলা থেকে রাজ্য অ্যাসেম্বলিতে নির্বাচিত হন, দক্ষিণ এশীয়-উগান্ডিয়ান বংশোদ্ভূত এবং মুসলিম আইনপ্রণেতাদের একজন হিসেবে ইতিহাস গড়েন। ২০২১ সালে শিল্পী রামা দুয়াজির সঙ্গে পরিচয় ও পরবর্তী সময়ে বিয়ের মধ্য দিয়ে তার ব্যক্তিজীবনও আলোচনায় আসে।

২০২৪ সালের জুনে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতেই বড় ব্যবধানে জেতার পর ক্রমান্বয়ে দলীয় শীর্ষ নেতাদের সমর্থন পেতে থাকেন তিনি। তাদের মধ্যে ছিলেন—কামালা হ্যারিস, গভর্নর ক্যাথি হোকুল এবং হাউস নেতা হাকিম জেফ্রিস।

বাস্তবভিত্তিক জীবনের গল্প, বাস-ট্রেনে প্রচারণা, সাশ্রয়ী জীবনের অঙ্গীকার সব মিলিয়ে তার বার্তা ছিল নিউইয়র্ককে আবার সাশ্রয়ী ও বসবাসযোগ্য শহর বানানো। নীতির মধ্যে ছিল ধনীদের ওপর কর বৃদ্ধি, ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে ৩০ ডলার করা, বিনামূল্যে বাসসেবা, পাবলিক গ্রোসারি স্টোর, ভাড়া স্থিতিশীল করা এবং সার্বজনীন শিশুযত্ন কর্মসূচি।

জাতিগত বিদ্বেষ, ইসলামোফোবিয়া ও রাজনৈতিক আক্রমণের মুখেও তিনি অবস্থান নরম না করে উর্দু, হিন্দি ও স্প্যানিশ ভাষায় প্রচারণা চালিয়েছেন। গাজা ইস্যুতে অবস্থান এবং অভিবাসীদের পক্ষে অবস্থান তাকে একদিকে যেমন নিপীড়িত সম্প্রদায়ের আশা বানিয়েছে, অন্যদিকে কট্টরপন্থি মহলে বিরাগভাজন করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বারবার আক্রমণ, এমনকি তাকে বহিষ্কারের হুমকি, মামদানিকে আরও দৃঢ় করে তুলেছে।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর