লালমনিরহাট: জেলার পাটগ্রাম সীমান্তে চোরাচালান তৎপরতা সন্দেহে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তিন রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এদিকে সাউন্ড নিক্ষেপের ঘটনায় কড়া প্রতিবাদ জািনয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বুধবার (৫ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের পকেট সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। আকস্মিক বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে সীমান্তবর্তী এলাকার ঘরবাড়ি কেঁপে ওঠে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই ঘুম থেকে জেগে ঘটনাটি কী ঘটছে বুঝতে না পেরে উৎকণ্ঠায় পড়েন।
স্থানীয় সূত্র ও বিজিবি জানায়, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের বিপরীতে ভারতের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থানার ভেল্কু লতামারী গ্রাম অবস্থিত। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের মেইন পিলার ৮৫৪ নম্বরের সাব-পিলার ৩ সংলগ্ন শূন্যরেখা এলাকায় ভারতের ১৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের রতনপুর ক্যাম্পের টহল দল ভোর ৫টা ২০ মিনিটের দিকে তিন রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
বিস্ফোরণের শব্দে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে বুড়িমারী বিজিবি কোম্পানি ও শ্রীরামপুর বিওপি ক্যাম্পের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরবর্তী সময়ে পতাকা বৈঠক ডাকা হলে বিজিবি আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
বৈঠকে বিজিবি প্রতিনিধি দল জানায়, সীমান্তে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ সাধারণ জনগণের মাঝে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। এমন পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আগে দুই বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় ও তথ্য আদান-প্রদান বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।
অন্যদিকে বিএসএফ জানায়, সীমান্তের ওই এলাকায় ৭-৮ জনের গরু চোরাকারবারি একটি দল ভারতের ভেতরে প্রবেশ করলে তাদের ধাওয়া দিতে বাধ্য হয়ে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। তবে ভবিষ্যতে উভয়বাহিনীর পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে এ ধরনের ঘটনা এড়ানোর বিষয়ে উভয়পক্ষ একমত হয়।
বর্তমানে সীমান্ত এলাকায় পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ বিষয়ে ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মোহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। এরই মধ্যে বিওপি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
পতাকা বৈঠকে ভারতের পক্ষে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন রতনপুর ক্যাম্পের ইন্সপেক্টর রনজিত মালি। বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন শ্রীরামপুর ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েব সুবেদার মোক্তার হোসেন।