ঢাকা: গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা ও দায়িত্বশীল সেবা প্রদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ ‘ক্লায়েন্ট প্রটেকশন সার্টিফিকেশন (সিপিসি) গোল্ড’ অর্জন করেছে ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্স। আন্তর্জাতিক সংস্থা মাইক্রোফাইনানজা রেটিং (এমএফআর) সম্প্রতি এই সনদ প্রদান করেছে।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাঈদ কুতুব।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নির্ধারিত ৮টি আন্তর্জাতিক নীতিমালার ভিত্তিতে সিপিসি গোল্ড সার্টিফিকেশন প্রদান করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে কার্যকর যোগাযোগ, ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ, গ্রাহক তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা, দায়বদ্ধ ঋণ ব্যবস্থাপনা ও অভিযোগ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া। এসব মানদণ্ডে ৯৫ শতাংশের বেশি নম্বর অর্জন করায় ব্র্যাক এই গোল্ড সার্টিফিকেশন পেয়েছে।
ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্স-এর নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ খাত দেশের অর্থনীতির ৮৫ শতাংশ চাহিদা পূরণ করছে। তবু এই খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক সময় অবমূল্যায়িত হয়। ব্র্যাকের এ স্বীকৃতি কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের নয়, বরং পুরো সেক্টরের জন্য গৌরবের।’
মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ)-এর নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘ব্র্যাকের মতো প্রতিষ্ঠানের কর্মসূচি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি আরও মজবুত করছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে তাদের অবদান প্রশংসনীয়। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোর সহযোগিতা ভবিষ্যতের বাংলাদেশ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ-এর অতিরিক্ত সচিব সাঈদ কুতুব বলেন, ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নারীর ক্ষমতায়নে ব্র্যাকের বহুমুখী অবদান দেশীয় উন্নয়নের গতি বাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন ব্র্যাক ও বাংলাদেশের জন্য সম্মানজনক একটি মুহূর্ত।’
ব্র্যাক মাইক্রো কর্মসূচির ঊর্ধ্বতন পরিচালক অরিঞ্জয় ধর জানান, ‘আমাদের ৯০ শতাংশ গ্রাহক নারী। আমরা শুধু ঋণ নয়, বরং আত্মবিশ্বাস ও সম্ভাবনার বিকাশেও কাজ করছি। মাঠকর্মীদের পরিশ্রম ও সততাই এই অর্জনের প্রকৃত নায়ক।’
বক্তারা বলেন, দেশের ৪ কোটি মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দিতে তাদের মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচি কাজ করছে। নারীর ক্ষমতায়ন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিকাশ ও দারিদ্র্য বিমোচনে এই সাফল্য নতুন মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ব্র্যাকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই স্বীকৃতি তাদের দায়িত্ব আরও বাড়িয়েছে। ভবিষ্যতে আর্থিক সেবা ছাড়াও শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের পাশে থাকার উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।