বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা ও মানবিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী আলোচনা ও প্রদর্শনী।
গত ৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টসওয়ান ভবনে অনুষ্ঠিত ‘দি কাইন্ডনেস অব পিপল টু ফেস দি ক্লাইমেট ক্রাইসিস ইন বাংলাদেশ টোগেদার’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন পরিবেশকর্মী পিটার মাসগ্রেভ, স্বাধীনতা ট্রাস্ট–এর সহযোগিতায়। এটি চলতি বছরের এ সিজন অব বাংলা ড্রামা উৎসবের অংশ ছিল।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আর্টসওয়ান ফোয়েতে উদ্বোধন করা হয় একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের চিত্র ফুটে উঠেছে। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা ও আকস্মিক বন্যার পাশাপাশি প্রদর্শনীতে দেখা যায় সাধারণ মানুষের ধৈর্য, সহমর্মিতা ও টিকে থাকার সংগ্রাম।
এই বছরের এ সিজন অব বাংলা ড্রামা –এর মূল প্রতিপাদ্য ছিল কাইন্ডনেস’। প্রদর্শনীতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশেষ করে বিভিন্ন এনজিও ও তাদের সহযোগীদের উদ্যোগে কীভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে, তার উদাহরণও তুলে ধরা হয়।
পরবর্তীতে ব্লক সিনেমায় পিটার মাসগ্রেভ পরিবেশন করেন এক মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা। এতে ছিল আলোকচিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, সংগীত ও কবিতা পাঠের সমন্বয়। পরিবেশবিদ হিসেবে ১৯৯০–এর দশক থেকেই কাজ করে আসা পিটার মাসগ্রেভ প্রায় নয় বছর বাংলাদেশে এনজিও খাতে কাজ করেছেন। তার বক্তব্যে তিনি তুলে ধরেন বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের স্থানীয় প্রভাব এবং সাধারণ মানুষের সংগ্রামী জীবনচিত্র।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কাজী রুকসানা বেগম, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের আর্টস অফিসার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অনীশা চন্দ্রশেখর, স্বাধীনতা ট্রাস্টের প্রতিনিধি, যিনি পিটার মাসগ্রেভকে অতিথিদের পরিচয় করিয়ে দেন।
সংগীত পরিবেশন করেন ড. শ্যামল চৌধুরী, সুনীতা চৌধুরী, মিতালি বনোয়ারী ও রুমি হক। কবিতা আবৃত্তি করেন রুমি হক ও সুনীতা চৌধুরী। অনুষ্ঠানটির প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেন সাদেক আহমেদ চৌধুরী।
জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের যে মানবিকতা, পারস্পরিক সহায়তা ও উদ্ভাবনী শক্তি—এই অনুষ্ঠান তারই এক অনন্য দলিল হয়ে রইল লন্ডনের প্রবাসী দর্শকদের মনে।