লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় চারটি শহরে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে একজন নিহত ও নয়জন আহত হয়েছেন। লেবাননের দাবি, এসব হামলার মধ্য দিয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে ইসরায়েল।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) ইসরায়েলের এসব হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে লেবানন সরকার ও হিজবুল্লাহ।
অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল হিজবুল্লাহর সামরিক স্থাপনা। তবে লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, যুদ্ধবিমানগুলো দেশটির টায়ার জেলার বেসামরিক এলাকায় আঘাত হেনেছে।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আজকের হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইসরায়েল আমাদের দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েল কোনো রাজনৈতিক সমাধানে আগ্রহ দেখায়নি এবং নিয়মিত হামলার মাধ্যমে তা প্রমাণ করছে।
হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তারা এখনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ তবে, ইসরায়েলের হামলার মুখে তারা আর চুপ করে থাকবে না।
হিজবুল্লার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যে শত্রু আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে, আত্মরক্ষার জন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া আমাদের বৈধ অধিকার।’
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননের আয়তা আল-জাবাল, তায়বেহ এবং তায়ের দেব্বাতে তারা হামলা শুরু করেছে। এর কিছুক্ষণ পর দক্ষিণ লেবাননেরই জাওতার-আল-শারকিয়া শহরের এক জায়গার বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় তারা। এর কিছুক্ষণ পর সেখানে হামলা শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলে বিক্ষিপ্ত হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এই সংঘাত পূর্ণ মাত্রার ইসরায়েলি আগ্রাসনে রূপ নেয়, যার ফলে চার হাজারে বেশি লেবানিজ নিহত এবং প্রায় ১৭ হাজার জন আহত হন।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ২০২৪ সালের নভেম্বরে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই হলেও দক্ষিণ লেবাননে প্রায় প্রতিদিনই আক্রমণ চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত হিজবুল্লাহর ৩৫০ জনের বেশি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।