ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হতে হবে এবং সেই নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই হতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ কিছুতেই তা মেনে নেবে না।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল আরও বলেন, ‘একজন উপদেষ্টা প্রেস কনফারেন্স করে হঠাৎ জানালেন যে রাজনৈতিক দলগুলোকে সাত দিন সময় দেওয়া হবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। তাহলে এতদিন ঐকমত্য কমিশনে যে কাজ হলো, তাতে দলগুলোর মতামত কোথায় গেল? এত টাকা খরচ করে কাজ হলো, কিন্তু কোনো সমাধান হলো না!’

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে নেতা-কর্মীরা। ছবি: সারাবাংলা
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব এবং ইনশাআল্লাহ বিজয়ী হয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব। যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানাই— যে ত্যাগ আপনারা করেছেন, শহিদদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনুন।’
তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘আধুনিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘তিনি যে ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি দিয়েছিলেন, সেই সংস্কারের কাজ যদি অন্তর্বর্তী সরকার শুরু করে, আমরা তাকে পূর্ণ সমর্থন জানাই।’
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপি মাঠে নামলে কিছু রাজনৈতিক দলকে তখন খুঁজেও পাওয়া যাবে না। ৭১ সালে যেমন জাতিকে বিভ্রান্ত করা হয়েছিল, এখনো তেমন প্রচেষ্টা চলছে। সময় থাকতেই জাতির কাছে ক্ষমা চান।’

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে নেতা-কর্মীরা। ছবি: সারাবাংলা
বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে শুরু হওয়া সমাবেশে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী এ সমাবেশ শেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নয়াপল্টন থেকে র্যালি শুরু হয়, যা সোনারগাঁও হোটেলের সামনে সার্ক ফোয়ারা পর্যন্ত যায়।
র্যালিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. আবদুল মঈন খান, আব্দুস সালাম, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আসাদুল করিম শাহিন, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, এস এম জিলানী, আব্দুল মোনায়েম মুন্না, হেলাল খান, হাসান জাফির তুহিন, সানজিদা ইসলাম তুলি ও রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে নেতা-কর্মীরা। ছবি: সারাবাংলা
বিভিন্ন ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ট্রাক ও সাজানো গাড়ি নিয়ে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে পুরো নয়াপল্টন এলাকা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।