Friday 07 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

একাত্তরে শুধু আ.লীগের মুক্তি, জাতি মুক্তি পেয়েছিল ৭ নভেম্বর: রিজভী

ঢাবি করেস্পন্ডেন্ট
৭ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:২৮ | আপডেট: ৭ নভেম্বর ২০২৫ ২০:০৬

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যে স্বাধীনতা আমরা একাত্তরে অর্জন করেছিলাম বিজয়ের মধ্য দিয়ে, সেটি জাতির মুক্তি ছিল না। সেখানে মুক্তি হয়েছিল আওয়ামী লীগের, মুক্তি হয়েছিল যুবলীগ-ছাত্রলীগের, কিন্তু জাতির মুক্তি হয়নি। জাতির মুক্তি হয়েছিল এই ৭ নভেম্বর।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন সংলগ্ন বটতলায় এক আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে দুদিন ব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘যারা স্বাধীনতার পরে সরকার গঠন করলেন, তারা নিজেদের ছাড়া আর কাউকে জাতি মনে করতেন না। নিজেদের কথা বলার অধিকার ছাড়া আর কারও কথা বলার অধিকার তারা একেবারেই পছন্দ করতেন না। এই ভীতির মধ্য থেকেই এক প্রচণ্ড বিপ্লবী তাড়না জাতির মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রজ্জ্বলিত হচ্ছিল। তারই বহিঃপ্রকাশ হলো ৭ নভেম্বর। এই দিনেই বাংলাদেশের জাতির মুক্তি ঘটল, আমাদের স্বাধীনতার মুক্তি ঘটল, আমাদের কথা বলার স্বাধীনতার মুক্তি ঘটল, আমাদের সংবাদপত্র পড়ার মুক্তি ঘটল।‘

তিনি আরও বলেন, ‘‘এই দিন আমাদের আত্মপরিচয়ের সংকট নিরসন করেছিলেন শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ এই নামটির মধ্যে দিয়ে তিনি সবকিছুর প্রতিনিধিত্ব করলেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করলেন, গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করলেন। সেই মানুষটি ছিলেন শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।’’

রিজভী বলেন, ‘আজকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল যে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে, এটি জীবন্ত ইতিহাসের প্রদর্শনী। এর মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্ম জানবে, কীভাবে এই দেশে আমাদের জাতিকে নতজানু করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই দিনেই আবার নতুন করে আমাদের স্বাধীনতার মুক্তি হয়েছে।’

এ সময় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বন্দিদশা থেকে শীর্ষ নেতৃত্বেই শুধু আসেননি, পুরো একটি বিভক্ত জাতিকে এক এবং ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তিনি সবাইকে এমনভাবে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন যে, সবাই ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ’-এর পরিচয় ধারণ করে বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিবেদিত ছিলেন-সেই প্রথম দিন থেকে শুরু করে তার শাহাদত বরণের আগের দিন পর্যন্ত। পুরো বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে তিনি সক্ষম হয়েছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরদিন থেকেই একটি বিশেষ গোষ্ঠী পুরো বাংলাদেশকে বিভক্ত করার রাজনীতি অব্যাহত রেখেছে। অথচ, ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা ছিল আমাদের। যারা শহিদ হয়েছেন, তাদের মূল উদ্দেশ্যই ছিল এক ও ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করা। শুধু তাই নয়, তাদের স্বপ্ন ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা; এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে গণতন্ত্র থাকবে, জনগণের অধিকার থাকবে।’

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে সেই কাঙ্ক্ষিত পথে ফিরিয়ে আনার এক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল যে বাংলাদেশ আমরা চেয়েছিলাম মহান মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে। যেখানে প্রতিটি মানুষের স্বাধীনতা থাকবে, প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার থাকবে, প্রতিটি মানুষ নিজের মতো করে বাঁচবে এবং নিজের মতো করে নিজের সরকার গঠন করতে পারবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আমাদের শিখিয়ে দেয় সকল ষড়যন্ত্রকে ধুলিসাৎ করে আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ৭ নভেম্বর আমাদের আরও শেখায় যে, সকল ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে শুধুমাত্র দেশের স্বার্থকে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে।’

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ কেন্দ্রের ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর