সিরিয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রায় ১০০ জন অপহরণ বা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা রেকর্ড করেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়। সংস্থাটি বলছে, নতুন করে গুমের ঘটনাও ঘটছে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) মুখপাত্র থামিন আল-কিতান বলেন, “সিরিয়ায় আগের সরকার পতনের ১১ মাস পর আমরা এখনো উদ্বেগজনক সংখ্যক অপহরণ ও জোরপূর্বক গুমের খবর পাচ্ছি।”
ওএইচসিএইচআর-এর তথ্যমতে, জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৯৭ জনের অপহরণ বা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করা কঠিন বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।
নিখোঁজ বা অপহরণের সর্বশেষ সংখ্যাটি সেই এক লাখের বেশি মানুষের তালিকায় নতুন সংযোজন, যারা সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনামলে নিখোঁজ হয়েছিলেন।
গত বছর ইসলামপন্থি গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম মাত্র ১১ দিনের অভিযানে আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে, যা সিরিয়ায় ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়।
অনেক সিরীয় নাগরিক এখনও চান, আসাদের শাসনামলে ঘটে যাওয়া নির্যাতন ও অপরাধের বিচার হোক বিশেষ করে তার কুখ্যাত কারাগারগুলোর ভেতর সংঘটিত নির্যাতনের।
জাতিসংঘ বলছে, সরকার পতনের পর কিছু পরিবার নিখোঁজ স্বজনদেরকে আবার খুঁজে পেলেও বহু পরিবার এখনো জানে না, তাদের প্রিয়জনরা জীবিত না মৃত।
সিরিয়ার অস্থির নিরাপত্তা পরিস্থিতি, বিশেষত উপকূলীয় অঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর সুয়েইদায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় নিখোঁজদের খোঁজ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
অনেকে ভয় পেয়ে কথা বলতে চাইছেন না বলে জানিয়েছে ওএইচসিএইচআর। মানবাধিকার কার্যালয়টির মুখপাত্র আল-কিতান জানান, জাতিসংঘের সঙ্গে কথা বলার কারণে কিছু মানুষ হুমকির মুখেও পড়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই সুয়েইদায় মানবিক উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়ার সময় নিখোঁজ হন ওএইচসিএইচআর ‘সিরিয়া সিভিল ডিফেন্স’-এর স্বেচ্ছাসেবক হামজা আল-আমারিন। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ওএইচসিএইচআর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
চলতি বছরের মে মাসে সিরিয়ার প্রেসিডেন্সি এক ঘোষণায় জানায়, নিখোঁজদের সন্ধান ও ন্যায়বিচারের জন্য দুটি কমিশন গঠন করা হবে, যা আসাদ পরিবারের শাসনামলে সংঘটিত অপরাধগুলো তদন্ত করবে।