ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেছেন, সরাসরি নির্বাচনে জয়ের সম্ভাবনা না থাকায় কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতার স্বাদ নিতে চাইছে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবন অডিটোরিয়ামে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘এসব দল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যাংকগুলোতে নিজেদের লোক বসিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সুযোগ ভোগ করছে। এটা গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকারবিরোধী কাজ।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জনগণ ভারতীয় আধিপত্য থেকে মুক্তির উদ্যোগ নিয়েছিল। একইভাবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাধারণ মানুষ, ছাত্র, রাজনৈতিক কর্মী ও ব্যবসায়ীরা আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছে। দুটি ঘটনাই আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জনগণের সংগ্রামের প্রতীক।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই সরকারের অনেক সদস্য ৫ আগস্টের আন্দোলনে কোনো ভূমিকা রাখেননি, কিন্তু যোগাযোগের কারণে তারা সরকারে এসেছেন। এখন তারা নিজেদের স্বার্থ নিয়েই ব্যস্ত, জনগণের মুক্তি বা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো রূপরেখা দেয়নি। বরং বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন।’
তিনি গণভোট ও প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতির বিরোধিতা করে বলেন, ‘গণভোটের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। এতে জনগণের স্বাধীন মতপ্রকাশ সীমিত হয়। আমরা সবাই মিলে একটি সনদে সই করেছি— নির্বাচনের পর সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে সেই সনদ বাস্তবায়ন করা হবে। তাহলে গণভোটের প্রয়োজন কেন?’
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে বসে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করলে সেটিই ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের যৌক্তিক পরিণতি হতো।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। জনগণ যদি বাধাহীনভাবে ভোট দিতে পারে, ইনশাআল্লাহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার এবং সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. পারভেজ আলম কাকনসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।