Saturday 08 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এআই ব্যবহারের নীতিমালা নেই দেশের ৬০ শতাংশ ব্যাংকে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৮ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:১৭

-ছবি : প্রতীকী ও সংগৃহীত

ঢাকা: দেশের ৬০ শতাংশ ব্যাংকেই সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের নীতিমালা নেই। ৪০ শতাংশ ব্যাংকে এই নীতিমালা রয়েছে। আর দেশের ৪৯ শতাংশ ব্যাংক আংশিকভাবে প্রস্তুত। ১১ শতাংশ ব্যাংকের কোন প্রস্তুতি নেই।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম)-এর এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। বিআইবিএম, বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসির যৌথ গবেষণায় ৩৮টি ব্যাংকের প্রশ্ন-উত্তরের তথ্য নিয়ে এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়।

শুক্রবার (০৭ নভেম্বর) এটি প্রকাশ করা হয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে এআই-নির্ভর সাইবার নিরাপত্তা টুল ব্যবহারে ব্যাংকগুলোর তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) অবকাঠামোর প্রস্তুতি তুলে ধরা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গবেষণায় বলা হয়, ব্যাংকিং খাতের সাইবার নিরাপত্তায় দুর্যোগ পুনরুদ্ধার বা ডিজাস্টার রিকভারি পরিকল্পনায় এআইয়ের ব্যবহার করে মাত্র ৫ শতাংশ ব্যাংক। আর জরিপে অংশ নেওয়া বাকি ৯৫ শতাংশ ব্যাংক জানিয়েছে, তারা এ ক্ষেত্রে এআই ব্যবহার করে না।

বিআইবিএম-এর পরিচালক মো. শিহাব উদ্দিন খান জানান, পুরো বিশ্বেই আর্থিক খাতসহ সব ধরনের খাতে আধুনিকায়ন হয়েছে। সে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার হামলা। সেখানে আর্থিক খাত নিয়মিতভাবেই অন্যতম টার্গেট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এ খাতে নিরাপত্তা বাড়াতে হলে এআই ব্যবহার প্রয়োজন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার বলেন, অনলাইন ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ-নির্ভর ব্যাংকিং কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী ব্যাংক খাতের কেন্দ্রবিন্দু। এআই ব্যবহার করে ব্যাংকগুলো সহজে অস্বাভাবিক কার্যক্রম শনাক্ত, ম্যালওয়্যার ও জালিয়াতি প্রতিরোধ কার্যকরভাবে করতে পারবে। প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সাইবার নিরাপত্তা শুধু প্রযুক্তি নয়, এটি একটি কৌশলগত বিষয়। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকও সাইবার নিরাপত্তা বাড়াতে নিয়মিত ই-ব্যাংকিং, ই-কমার্স, মোবাইল ব্যাংকিং ও অনলাইন পেমেন্ট নীতিমালা হালনাগাদ করছে।

পূবালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আলী বলেন, সারা পৃথিবী এআইকে গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশ্বব্যাপী আমরা দেখতে পাচ্ছি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষত পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা এবং ব্যাংকিং খাতে দ্রুত প্রয়োগের দিকে যাচ্ছে। ১০-১৫ বছর পর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবোটিকস মানবজীবনের সঙ্গে সহাবস্থান করবে। তাই এখন থেকেই আমাদের এই বিষয়ে কৌশলগত পরিকল্পনা প্রয়োজন।’

ইস্টার্ন ব্যাংকের অতিরিক্ত এমডি ওসমান এরশাদ ফয়েজ বলেন, ব্যাংকগুলোকে নিজেদের আরও বেশি আধুনিকায়ন করতে হবে। না হলে ব্যাংকুবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা দখল করে নেবে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান ও ফিনটেক কোম্পানি আর্থিক বাজার বদলে দিয়েছে। নতুন প্রজন্ম এখন ব্যাংকে যেতে চায় না, তারা সবকিছু অ্যাপসে চায়। এ ছাড়া সাইবার নিরাপত্তায় ব্যাংকের এমডি ও সিইওদেরও প্রযুক্তিবিষয়ক প্রশিক্ষণ থাকা প্রয়োজন। এ জন্য ব্যাংকগুলোর প্রয়োজন গ্যামিফিকেশন বা খেলার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সচেতনতা তৈরি করা।
বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার অ্যান্ড ডিজাস্টার রিকভারি সাইট-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মুহাম্মদ ইসহাক মিয়া বলেন, দেশের বেশির ভাগ ব্যাংকে প্রযুক্তি খাতে বড় বিনিয়োগ থাকলেও তা কতটা কাজে লাগানো হচ্ছে, এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এই গবেষণায় যেসব ব্যাংক অংশগ্রহণ করেছে, তাদের বেশির ভাগ ভালো ব্যাংক। তাহলে বাকি ২২ ব্যাংকের অবস্থা নিশ্চয়ই আরও খারাপ। এ ছাড়া দেশে এখনো আইটি ফর বিজনেস ধারণাটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়নি।

সারাবাংলা/এসএ/এসআর
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর