কুষ্টিয়া: চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রেক্ষিতে তৈরিকৃত জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং প্রতিবেদন নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সেমিনার আয়োজন করেছে সামাজিক সংগঠন সোচ্চার।
শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনের ২১২ ও ২১৩ নম্বর কক্ষে এ সেমিনার আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে জুলাই-আগস্ট ২০২৪ সালের ঘটনাবলির মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট বাস্তবতা, তথ্য, বিশ্লেষণ ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এতে আন্দোলনে দেশব্যাপী ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের বাস্তবচিত্র তুলে ধরার দিকটি আলোচনা হয়। একইসঙ্গে ক্যাম্পাসগুলোতে অধিকার সংরক্ষণের কথা জানান সোচ্চার প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রতিবেদনে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল ৫টি বিষয়ে সুপারিশ জমা দেয় তা হলো- জবাবদিহিতা ও বিচার বিভাগ নিশ্চিত করা, পুলিশ ও নিরাপত্তা বিভাগের অসামরিকীকরণ, নাগরিক পরিসর বৃদ্ধি, রাজনৈতিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সুশাসন নিশ্চিত করা। যার ভিত্তিতে বাংলাদেশের চলমান সরকার মানবাধিকার নিশ্চিত করতে পারবে বলে মনে করছে জাতিসংঘ।
সেমিনারে সোচ্চার স্টুডেন্টস নেটওয়ার্ক ইবি শাখার সভাপতি রাহাত আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম. আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড. আব্দুস সবুর, আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের নাছির উদ্দিন মিঝি, অধ্যাপক ড. এবিএম জাকির হোসেন এবং সহকারী প্রক্টর ও সোচ্চারের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম, ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।
সেমিনারে অতিথি হিসেবে ছিলেন জাতিসংঘের গর্ভনেন্স বিশেষজ্ঞ ও সিনিয়র মানবাধিকার কর্মকর্তা জাহিদ হোসাইন এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শাইখ মাহদি, সোচ্চার প্রজেক্ট ম্যানেজার ও কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক সুমাইয়া তামান্না ও সহকারী পরিচালক সুমাইয়া তাসনিম।
জাতিসংঘের বাংলাদেশের প্রতিনিধি জাহিদ হাসান বলেন, ‘জাতিসংঘ সারাবিশ্বে শান্তি, নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার নিয়ে কাজের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের গত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হওয়া ঘটনাগুলো লিপিবদ্ধ করেছে। এর ভিত্তিতে তৈরি করা প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে। এটি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।’
রোহিঙ্গা গণহত্যা ও পুনর্বাসনের প্রশ্নে তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাছে কোনো টাটকা জবাব নেই যে কেন জাতিসংঘও পারছে না। এটা জাতিরাষ্ট্রের সমস্যা হওয়ায় জাতিসংঘের পারারও কথা না।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘এই রিপোর্টের মাধ্যমে বিগত স্বৈরশাসনের মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে তুলে ধরেছে। সমস্যাগুলো আমাদের আরও গভীরভাবে জানতে হবে, বুঝতে হবে। এটি আমাদের সচেতনতার অংশ। এই রিপোর্ট উপস্থাপনের ফলে আমাদের কাজ এটি অধ্যয়ন করে নিজেদের দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা।’