ঢাকা: বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “অনির্বাচিত সরকার থাকার কারণে গত ১৪ মাসে রাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠানই সঠিকভাবে কাজ করছে না।”
শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের আয়োজনে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমির খসরু বলেন, “যখন একটি সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয় না, তখন রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তার স্বাধীনতা ও জবাবদিহিতা হারায়। বর্তমানে সেই পরিস্থিতিই তৈরি হয়েছে। নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ—সবখানেই অদক্ষতা ও রাজনৈতিক প্রভাব স্পষ্ট।”
তিনি অভিযোগ করেন, “রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত এখন একক গোষ্ঠীর হাতে। জনগণের মতামত উপেক্ষা করে যারা নিজেদের ইচ্ছা চাপিয়ে দেয়, তারা গণতন্ত্রের শত্রু। দেশের মালিকানা আজ জনগণের হাতে নেই—অল্প কিছু লোক নিজেদের মালিক মনে করে জাতির ভাগ্য নির্ধারণ করছে।”
বিএনপি নেতা বলেন, “একটি দেশের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য আইনের শাসন ও দক্ষ প্রশাসনিক কাঠামো অপরিহার্য। পুলিশ প্রশাসনের কাজ জনগণের সেবা করা, তাদের ওপর কর্তৃত্ব করা নয়। জনগণকে সেবক নয়, অংশীদার হিসেবে দেখতে হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “রাষ্ট্রে জবাবদিহিতা ফিরিয়ে আনতে হলে নির্বাচিত সরকার গঠন ছাড়া বিকল্প নেই। প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে।”
আমির খসরু স্থানীয় সরকার ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “পুলিশ সম্পূর্ণভাবে কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত হয়, কিন্তু জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকারের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সমন্বয় প্রয়োজন। স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী না করলে সেবা ও জবাবদিহিতা—দুটিই হারিয়ে যাবে।”
বিএনপি নেতা বলেন, “বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ডে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে। নির্বাচনি প্রহসনের মাধ্যমে যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা শুধু বিরোধী দল নয়, দেশের নাগরিক সমাজকেও দমন করছে। এখন সময় এসেছে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার।”
তিনি আহ্বান জানান, “দেশে একটি নিরপেক্ষ, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠন করতে হবে—যাতে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আবারও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে।”
আমির খসরু বলেন, “আমরা সংঘর্ষ চাই না, চাই সহনশীল রাজনীতি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। বিএনপি বিশ্বাস করে, গণতন্ত্রের ভিত্তি হলো ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা। রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে রাজনৈতিক সংস্কৃতির পুনর্গঠনের ওপর।”
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে—এটাই আজকের সবচেয়ে বড় সংস্কার।”