ঢাকা: চলতি সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেমে না এলে আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, আমরা বাজারের ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছি। চলতি সপ্তাহের মধ্যে যদি পেঁয়াজের দাম প্রয়োজন অনুযায়ী না কমে আমরা আমদানি অনুমোদন ইস্যু করে দেব। অনেকেই পেঁয়াজ আমদানির জন্য আবেদন করেছেন। বর্তমানে ২ হাজার ৮০০-এর মতো পেঁয়াজ আমদানির আবেদন আছে। তবে দাম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে না।
রোববার (৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, অনেকদিন পেঁয়াজের দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকার মধ্যে স্থির ছিল। এর আগে পেঁয়াজের দাম ৩৫-৪০ টাকায় নেমে এসেছিল। কিন্তু সেটা আমাদের কৃষকদের জন্য উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। গত এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন ধরে দেখছি পেঁয়াজের মূল্যের একটা ঊর্ধ্বগতি হয়েছে।
কয়েক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪০-৫০ টাকা বেড়ে যাওয়াকে যৌক্তিক মনে করেন কি না- জানতে চাইলে বশিরউদ্দীন বলেন, অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত নয়। এমন কোনো বিশেষ ঘটনা ঘটেনি। এ মুহূর্তে কৃষকের কাছে পেঁয়াজ নেই এবং এ বাড়তি মূল্যের টাকা কৃষকের পকেটেও যায়নি।
সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর কোনো তথ্য তার কাছে নেই জানিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আপনারা আমাদের জানান যে, এ জায়গায় এভাবে সিন্ডিকেশনটা হচ্ছে।
তিনি বলেন, মৌসুমের শেষ সময়, শুকিয়ে পেঁয়াজের ওজনও কমে গেছে। এছাড়া হাইফ্লো মেশিন দিয়ে যারা পেঁয়াজ সংরক্ষণ করেছেন তাদেরও ব্যয় বেড়েছে। এসব কারণে দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, স্থলবন্দরের ওপাশে অনেক পেঁয়াজ মজুত করা হয়েছে। আমরা যদি আমদানির অনুমতি দেই, তবে স্বাভাবিকভাবে বাজারে ধস নামবে। আমরা ধস নামাতে চাই না। আমরা চাই একটা স্বাভাবিক মূল্য পরিস্থিতি বিরাজ করুক। এতে আমরা আমাদের নিজস্ব কৃষি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারবো। কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। একইভাবে ভোক্তারা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই- দাবি করে তিনি বলেন, পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। পাশাপাশি পেঁয়াজ সংরক্ষণের সুবিধার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ১০ হাজার হাই ফ্লো মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। এর ফলে পেঁয়াজের সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটেছে।
বাণিজ্য সচিব বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুযায়ী সাড়ে ৩ লাখ টনের মতো পেঁয়াজ মজুদ আছে। এ মাসের মধ্যে আসবে ৮৫ থেকে ৮৭ হাজার মেট্রিক টন এবং আগামী মাসে আসবে আড়াই লাখ মেট্রিক টন। এরপর রেগুলার পেঁয়াজ বাজারে আসবে। পেঁয়াজের কোনো সঙ্কট নেই।