Monday 10 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শহিদ নূর হোসেন দিবস আজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১০ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৩ | আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৫ ১০:৫৭

শহিদ নূর হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ঢাকার সেই জিরো পয়েন্ট—আজকের শহিদ নূর হোসেন চত্বর। প্রতি বছর ১০ নভেম্বর সকালে এখানে ভিড় করেন রাজনৈতিক নেতাকর্মী, নাগরিক সমাজ, তরুণ প্রজন্ম ও সাধারণ মানুষ। কেউ হাতে ফুল নিয়ে আসেন, কেউ মোমবাতি জ্বালান, কেউ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন কয়েক মুহূর্ত। তাদের মুখে একটিই নাম—নূর হোসেন।

এক তরুণের আত্মত্যাগ, এক জাতির জেগে ওঠা ১৯৮৭ সালের এই দিনটি ছিল মঙ্গলবার। ঢাকায় তখন উত্তাল স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন। তৎকালীন সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতন দাবিতে মিছিল নামেন যুবলীগের তরুণ কর্মী নূর হোসেন।

তার পরনে ছিল জিনস ও খোলা গায়ে সাদা শরীর—গায়ে লাল রঙে লেখা দুটি বাক্য: “স্বৈরাচার নিপাত যাক” (বুকের ওপরে) “গণতন্ত্র মুক্তি পাক” (পিঠের ওপরে)।

বিজ্ঞাপন

এই দুটি বাক্য হয়ে ওঠে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক। মিছিলটি যখন রাজধানীর তৎকালীন জিরো পয়েন্টে পৌঁছায়, পুলিশ গুলি চালায়। গুলিতে শহিদ হন মাত্র ২৬ বছরের নূর হোসেন।

তার রক্তে ভিজে যায় ঢাকার রাজপথ, কিন্তু সেদিন থেকেই আন্দোলন নতুন গতি পায়। এই মৃত্যুই পরবর্তীতে ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের বীজ বপন করে, যা শেষ পর্যন্ত স্বৈরাচার পতনের পথ প্রশস্ত করে।

‘নূর হোসেন মানে সাহসের প্রতীক’

নূর হোসেন ছিলেন নারায়ণগঞ্জের এক সাধারণ শ্রমজীবী পরিবারের সন্তান। পেশায় মোটর ড্রাইভার হলেও তার ভেতরে ছিল দেশের জন্য কিছু করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা।

সহযোদ্ধারা বলেন, “ওর মধ্যে একটা আলাদা জেদ ছিল—স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়বে। সেই জেদই আজ ইতিহাস হয়ে গেছে।”

আজকের তরুণ প্রজন্মের কাছে নূর হোসেন শুধু এক শহিদের নাম নয়, এক অনুপ্রেরণার প্রতীক। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, অধিকারহীনতা বা গণতন্ত্রের প্রশ্নে অনেকেই তার কথা স্মরণ করেন।

চত্বরে শ্রদ্ধার ফুল, মনে নবপ্রেরণা

প্রতি বছর এদিন ভোর থেকেই রাজধানীর শহিদ নূর হোসেন চত্বরে মানুষের ঢল নামে। রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষ একে একে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

তার জন্মস্থান নারায়ণগঞ্জেও দিনটি পালিত হয় যথাযোগ্য মর্যাদায়। সেখানে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিল ও প্রদীপ প্রজ্বলন।

শেষ কথা

একজন তরুণ নিজের শরীরকে বানিয়েছিলেন প্রতিবাদের ক্যানভাস। গায়ে লিখেছিলেন যা সারা জাতির হৃদয়ে চিরস্থায়ী দাগ রেখে গেছে।

নূর হোসেন আজ আর নেই, কিন্তু তার রক্তে লেখা সেই দুই বাক্য আজও জ্বলজ্বল করে—“স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক।”

সারাবাংলা/এফএন/এসডব্লিউ
বিজ্ঞাপন

সারাদেশে বাড়ছে শীতের আমেজ
১০ নভেম্বর ২০২৫ ১০:১৩

আরো

সম্পর্কিত খবর