Thursday 16 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জন্মদিনের দাওয়াতে ডেকে পুলিশ পরিদর্শক মামুনকে হত্যা


১২ জুলাই ২০১৮ ১২:১৪ | আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ১৩:০৮

।। উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ট্রেনিং স্কুলে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খানকে (৪০) বনানীর একটি বাসায় জন্মদিনের নাম করে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই খুন করা হয় তাকে। কেউ যেন চিনতে না পারে, সে জন্য গ্যাসের আগুনে এবং পরে বস্তায় ভরে ফেলে দেওয়ার সময়ও পেট্রোল দিয়ে পোড়ানো হয় তার মরদেহ।

মামুন হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে আটক এক নারীসহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এসব তথ্য জানতে পেরেছে গোয়েন্দা পুলিশ। বুধবার (১১ জুলাই) রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র সারাবাংলা’কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, রোববার (৮ জুলাই) সন্ধ্যার পর থেকে পুলিশ পরিদর্শক মামুনের কোনো খোঁজ না পেয়ে সবুজবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করা হয়। এর পরপরই মাঠে নামেন গোয়েন্দারা। পরদিন মোবাইল কলের সূত্র ধরে আটক করা হয় দু’জনকে। তাদের কাছে পাওয়া তথ্য থেকেই গাজীপুর থেকে উদ্ধার করা হয় পুলিশ পরিদর্শক মামুনের মরদেহ।

গোয়েন্দারা সারাবাংলা’কে বলেন, জন্মদিনের নাম করে রোববার রাতে বনানীর একটি বাসায় ডেকে নেওয়া হয় মামুনকে। সেখানেই একপর্যায়ে খুন করা হয় মামুনকে। এরপর তাকে যেন কেউ চিনতে না পারে, সেজন্য তার শরীর গ্যাসের আগুনে ও পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, মামুনকে হত্যা করে মরদেহ পোড়ানোর পর কালো গ্লাসের একটি গাড়িতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়কে ঘুরে বেরিয়েছে হত্যাকারীরা। কিন্তু রাজধানীর কোথাও সেই মরদেহ ফেলতে না পেরে শেষ পর্যন্ত ভোরের দিকে গাজীপুরের কালিগঞ্জ উপজেলার এক জঙ্গলে সেটি ফেলে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ পরিদর্শক মামুনের পূর্বপরিচিত এক নারীও তার হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলেও জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। মামুনকে হত্যার জন্য যে জন্মদিনের পার্টির নাম করে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানেও ছিলেন ওই নারী। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ওই নারী মঙ্গলবার (১০ জুলাই) বিকেলে যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে চলে যাবেন। এমন তথ্যের ভিত্তিতে বেনাপোল পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মামুনের ওই জন্মদিনের পার্টিতে যোগ দেওয়া বা এই নারীর সাথে তার হত্যাকাণ্ডের সম্পর্ক নিয়ে এখনও রহস্য কাটেনি গোয়েন্দা পুলিশের।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশ পূর্ব বিভাগের উপকমিশনার খোন্দকার নুরুন্নবী চৌধুরী বলেন, পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যার ঘটনায় তদন্ত চলছে। খুব শিগগিরই এর রহস্য উদঘাটন করা হবে বলে আমরা আশা করছি।

এদিকে, বুধবার (১১ জুলাই) বনানী থানায় মামুন হত্যার ঘটনায় তার ভাই জাহাঙ্গীর বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। আসামিরা হলেন— রহমত, শেখ হৃদয় ওরফে আপন, স্বপন, দিদার, মিজান, আতিক, রবিউল, সুরাইয়া আক্তার ওরফে কেয়া, মেহেরুন নেসা স্বর্ণা ওরফে আফরিন এবং ফারিয়া বিনতে মীম ওরফে মাইশা। আসামির তালিকায় থাকা তিন নারী নিজেদের মডেল হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামুন ইমরান খান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষে পুলিশের উপপরিদর্শক (সাবইন্সপেক্টর) পদে যোগ দেন। এরপর তিনি মিশনে যান। মিশনে থাকা অবস্থাতে পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পান তিনি। এরপর পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) ট্রেনিং স্কুলে কর্মরত ছিলেন। ব্যক্তিজীবনে মামুন ছিলেন অবিবাহিত। সবুজবাগে ভাইয়ের সাথে থাকতেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জের রাজা রামপুর গ্রামে। তার বাবা মৃত আজাহার আলী খান।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর