Monday 10 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২৪ ঘণ্টার মধ্যে রেজিস্ট্রারের অপসারণ চায় রাকসু

রাবি করেসপন্ডেন্ট
১০ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:১৪ | আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৫ ২০:৪৩

রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবিতে রাকসু প্রতিনিধিদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রেজিস্ট্রারকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন রাকসুর প্রতিনিধিরা। সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগে চলমান অচলাবস্থা আজ ২৩ দিন অতিক্রম করেছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকট নিরসনে রাকসুর প্রতিনিধিদল একাধিকবার উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নকীবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দ্রুত সমাধানের অনুরোধ জানায়।

বিজ্ঞাপন

উপাচার্য বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে গত বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অপসারণের নির্দেশে সই করেন এবং ফাইলটি রেজিস্ট্রার দফতরে পাঠিয়ে দেন। প্রশাসনিক নিয়ম অনুযায়ী রেজিস্ট্রার দফতর থেকে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে একই দিনে চিঠি ইস্যু হওয়ার কথা থাকলেও রোববার দুপুর পর্যন্ত তা ইস্যু করা হয়নি। এতে বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থেকে শিক্ষার্থীরা আরও একদিন অ্যাকাডেমিক ক্ষতির মুখে পড়ে।

বিষয়টি জানতে রাকসুর সাধারণ সম্পাদক ও সিনেট সদস্য সালাহউদ্দিন আম্মার রেজিস্ট্রার দফতরে গেলে দফতরের এক কর্মকর্তা জানান, রেজিস্ট্রার তখন রাজনৈতিক প্রোগ্রামে ব্যস্ত আছেন এবং পরে আসতে বলেছেন। রাকসুর মতে, প্রশাসনিক দায়িত্বের সময় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা যেমন নীতিগতভাবে অনুচিত, তেমনি এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশাসন ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী।

পরে রেজিস্ট্রার ইফতেখার আলম মাসউদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে বিষয়টির অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং উত্তেজিত হয়ে কথা বলেন। এই ঘটনার একটি অংশ ভিডিওতে ধারণ করা হয়েছে, যা ইতোমধ্যে বহু শিক্ষার্থী দেখেছেন বলে জানায় রাকসু। শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক সংকটকে উপেক্ষা করে প্রশাসনিক পদক্ষেপ বিলম্বিত করা দায়িত্বহীনতা ও জবাবদিহিতার অভাবের দৃষ্টান্ত। একজন নির্বাচিত ছাত্রপ্রতিনিধির সঙ্গে এমন আচরণ রাকসুর মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করেছে এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক নীতিমালার পরিপন্থী।

রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাউদ্দীন আম্মার বলেন, ‘ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ২৩ দিন ধরে ক্লাস না পেয়ে রাকসুর কাছে অভিযোগ করেছেন। এই বিষয়টি নিয়ে গতকাল দুপুর ২টার দিকে রেজিস্ট্রার দফতরে গেলে রেজিস্ট্রারের সচিব জানান, সেখানে মহানগর বিএনপির একটি রাজনৈতিক মিটিং চলছে। প্রশাসনিক দফতরে রাজনৈতিক কার্যক্রম চলা অত্যন্ত অনৈতিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার পরিপন্থী। যে কর্মকর্তা বা শিক্ষক নিজের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব ভুলে রাজনৈতিক প্রোগ্রামে যুক্ত হন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবিলম্বে অপসারণ করা উচিত।’

রাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘ঘটনা যেহেতু রেজিস্ট্রারের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাই আমরা রেজিস্ট্রারের অপসারণ চাই। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অফিসার পদে থাকলে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির শিকার হয়। সামনে আমরা দাবি জানাব, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেন কর্মকর্তার পদে না রাখা হয়।’ এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাকসু প্রতিনিধির সঙ্গে নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচনের পরে বিমাতা সূলভ আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেন ভিপি।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম থেকেই দেখবেন শপথ অনুষ্ঠান দিতে দেরি করা, প্রথম কার্যদিবস দিতে দেরি করা, সার্বিক বিষয়ে অন্যান্য ক্যাম্পাস থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিমাতা সূলভ আচরণ করছে। কী কী কারণে তারা এগুলো করছে তা সবার সামনে চলে আসছে। তারা রাকসু ফান্ডের ৩৫ বছরের টাকার হিসাব দিতে না পেরে আমাদের সঙ্গে এরূপ আচরণ করছে।’

সারাবাংলা/এনএমই/এসএস
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর