Monday 10 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন নিশ্চিতে আইএমএফ’র গুরুত্বারোপ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১০ নভেম্বর ২০২৫ ২০:৩৬ | আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৫ ২১:৪৩

-ছবি : প্রতীকী ও সংগৃহীত

ঢাকা: স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তবহবিল (আইএমএফ)-এর ঢাকা সফররত প্রতিনিধি দল। এ প্রেক্ষিতে দেশের অর্থ ব্যবস্থার স্বার্থে ক্ষমতাসীনদের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে সংস্থাটি।

সোমবার (১০ ন‌ভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ঢাকা সফররত আইএমএফ প্রতিনিধিরা এ ধরনের মনোভাব ব্যক্ত করেন বলে জানা যায়।

জানা যায়, বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতায় বিশেষত অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি)-এর ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ’ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আইএফএম। এছাড়া রাজনৈতিক বিবেচনায় বিভিন্ন ব্যাংকের লাইসেন্স ইস্যু, ব্যাংক দখল করে লুটপাট, ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে নীতি সুবিধার আড়ালে অবৈধভাবে সুযোগ প্রদান ইত্যাদি বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞাপন

বৈঠকে আইএমএফ জানিয়েছে, তাদের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির শর্ত অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের নিচে নামানোর প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি উল্টো। সরকার পরিবর্তনের পর গোপন করা প্রকৃত তথ্য প্রকাশিত হলে দেখা গেছে, মাত্র এক বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় চার লাখ কোটি টাকা থেকে বেড়ে সাড়ে ছয় লাখ কোটি টাকা হয়েছে। সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি হার ৪০ শতাংশ ছাড়িয়েছে, আর বেসরকারি খাতেও ঋণ হার ১০ শতাংশের ওপরে পৌঁছেছে। আর ডলার দর বাজারের ওপর শতভাগ ছেড়ে দেওয়ার নামে বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করছে।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিগত সরকারের সুবিধাভোগী বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলম, সালমান এফ রহমান, নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ ব্যাংক লুটেরাদের অনিয়ম ছিল ওপেন সিক্রেট। রাজনৈতিকভাবে প্রভাব কাটিয়ে অনেক ব্যসায়ী ব্যাংকের লাইসেন্স নিয়েছেন। তারা দলীয় বিবেচনায় ঋণ ছাড় এবং খেলাপিদের ঋণ নিয়মিত দেখাত। আর খেলাপিরা অর্থ লুটপাট করে পাচারে মত্ত হয়ৈ উঠে। যা ঢাকতে লোক দেখানো পরিদর্শন করে বালাদেশ ব্যাংক। এভাবে ব্যাংক খাত খাদের কিনারায় চলে যায়। এসব বিষয় নিয়ে আইএমএফের সদস্যরা প্রশ্নে জর্জরিত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের। সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ নেই বিষয়টি বারবার উঠে এসেছে। আর সরকারের হয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যক্রমের ওপর অর্থ মন্ত্রনালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের হস্তক্ষেপ নিয়ে তুমুল তর্ক-বিতর্ক হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, আইএমএফ মিশন নিয়মিত ভিজিট চলমান রেখেছে। তারা দেশের ঋণে শর্তের বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানার চেষ্টা করছে। আমারদের দুই-একটা ইস্যু ছাড়া প্রায় সব সূচকে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। মিশন শেষে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলনে অগ্রগতি ও পরিদর্শন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবে। সেখানে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে একটি সমঝোতা স্বারক চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে।

সারাবাংলা/এসএ/এসআর
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর