ঢাকা: সংস্কারের পথে না হাঁটলে বিএনপি নিশ্চিহ্নের পথে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়েছেন, কিন্তু তারেক রহমান পালাবেন কই?
সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় শ্রমিক শক্তি আয়োজিত ‘জুলাই সনদে শ্রমিক শ্রেণির রাজনৈতিক অবমূল্যায়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘দেশে রিফর্ম ও জুলাই সনদ যদি বাস্তবায়ন না হয় এবং নির্বাচন পিছিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে দায়ী থাকবে দুটি দল। সরকার যদি কোনো বিশেষ দলের পক্ষ নেয়, তাহলে এনসিপি শহিদ পরিবারদের নিয়ে রাজপথে নামবে।’
বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামীর পার্লামেন্টে কোনো একক নেতৃত্ব দেখতে চায় না এনসিপি। এক ফ্যাসিস্টকে সরিয়ে আরেক ফ্যাসিস্ট আনার কোনো মানে নেই। সংস্কারের পথে না হাঁটলে বিএনপি নিশ্চিহ্নের পথে যাবে।’
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘একাত্তরের কার্ড বা শহিদ পরিবারের কার্ড খেলে কেউ নব্য ফ্যাসিস্ট হতে চাইলে তা মেনে নেওয়া হবে না। মুজিবের সময়ের কম্বল চোরেরা যেমন দেশকে ফ্যাসিবাদের দিকে নিয়ে গিয়েছিল, আজ তারেক ভাই তারেক ভাই করে একই কাজ করছে কিছু মানুষ। কিন্তু জেন জি প্রজন্ম যেমন আপনাদের ভালোবাসতে জানে, তেমনি আপনাদের শোধরাতেও জানে।’
জনগণের প্রতি এনসিপির দায়বদ্ধতার কথা উল্লেখ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘বিএনপি একসময় প্রার্থী খুঁজে পেত না। আগে সাকিব আল হাসানরা ছিলেন নৌকার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর, এখন কিছু ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ধানের শীষে গেছে। কিন্তু আমাদের কাছে ভোটের চেয়ে জনগণ বড়। জনগণের জয় হবে ব্যালট রেভ্যুলেশনে, না হলে বুলেট রেভ্যুলেশনে।’
বাম দলগুলোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শ্রম কমিশনের কোনো রিপোর্ট বাস্তবায়িত হয়নি। যারা শ্রমিক শ্রেণির মুক্তির কথা বলত, তারা ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে তা ভুলে গেছে। লাল পতাকাবাহী দলগুলোকে বলব, কয়েকটা সিটের জন্য নিজেদের অর্জন বিক্রি করবেন না।’
শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারকে এখনই শ্রমিকদের সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে আনতে হবে।’
ন্যায্যতার পররাষ্ট্রনীতির দাবি জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, ‘আমরা কোনো দেশের বা কোনো দলের সেবাদাস হতে চাই না। আমরা চাই ন্যায্যতার ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি। ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করে ধর্মীয় মূল্যবোধ নষ্ট করা যাবে না।’
আন্দোলন-সংগ্রামে নারীদের অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘মায়েরা ও মেয়েরা গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা রাখলেও সংস্কারের আলোচনায় তাদের জায়গা নেই। দলের প্রধান নারী হলেই সমাজ নারীবান্ধব হয় না।’