Tuesday 11 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের রায় ২০ নভেম্বর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১১ নভেম্বর ২০২৫ ১১:৫৬ | আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৫ ১২:১০

ঢাকা: নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ২০ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) রায় ঘোষণা করবেন আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ রায়ের জন্য এ তারিখ ধার্য করেন।

পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের কিছু অংশ বাতিল করে হাই কোর্টের দেওয়া এক রায়ের ফলে এরইমধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার ফেরার পথ তৈরি হয়েছে।

এখন ত্রয়োদশ সংশোধনীর এ মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে স্পষ্ট হবে–তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরবে কি না এবং ফিরলে কবে, কীভাবে তা চালু হবে।

বিজ্ঞাপন

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে একাধিক রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে গত ২৭ অগাস্ট আপিলের অনুমতি দেয় পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের চাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান এনে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংসদে পাস করে তৎকালীন বিএনপি সরকার।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ১৯৯৮ সালে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী।

পরে বিএনপি সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ৪ অগাস্ট সেই রিট খারিজ হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বৈধই থাকে।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে আপিল করেন রিট আবেদনকারীরা। ২০০৬ সালে রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে জরুরি অবস্থা জারির পর গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর ক্ষমতায় থাকার পর এ পদ্ধতির দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

পরে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলে ২০১০ সালের ১ মার্চ আপিল বিভাগে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে আপিল আবেদনকারী এবং রাষ্ট্রপক্ষ ছাড়াও অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে শীর্ষস্থানীয় ৮ জন আইনজীবী বক্তব্য দেন।

তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন। এমনকি তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও এর পক্ষে মত দেন।

ওই আপিল মঞ্জুর করে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেয়। তখন প্রধান বিচারপতি ছিলেন এ বি এম খায়রুল হক।

পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার আগেই ২০১১ সালের ৩০ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলুপ্তিসহ ৫৫টি সংশোধনী সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী প্রস্তাব জাতীয় সংসদে পাস হয়। একই বছরের ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে একাধিক রিভিউ আবেদন জমা পড়ে।

গত বছরের ২৭ আগস্ট একটি আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। একই বছরের ১৬ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এরপর ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারও একটি রিভিউ আবেদন করেন। এছাড়া, নওগাঁর বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেনও আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।

এ চার রিভিউ আবেদনের একসঙ্গে শুনানি শেষে নতুন করে আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত দেয় আপিল বিভাগ।

গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাই কোর্ট বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেয়। ফলে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার ফেরার পথ তৈরি হয়।

সারাবাংলা/এমএমএইচ/এসডব্লিউ
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর