ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালনে আন্তর্জতিক মানদণ্ডে ‘সি’ গ্রেডভুক্ত হয়েছেন ড. আহসান এইচ মনসুর।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, প্রবৃদ্ধি অর্জন, মুদ্রার স্থিতিশীলতা ও নীতিগত বিশ্বাসযোগ্যতার মত চার সূচকে গড় হিসাবের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক আর্থিক সাময়িকী ‘গ্লোবাল ফাইন্যান্স’ এই মূল্যায়ন করেছে।
সম্প্রতি এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে শ্রীলঙ্কার গভর্নর নন্দলাল উইরাসিংহে পেয়েছেন ‘এ’ গ্রেড এবং ভিয়েতনামের গভর্নর নুয়েন থি হং ‘এ প্লাস’ নিয়ে শীর্ষে রয়েছেন।
গ্লোবাল ফাইন্যান্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সাবেক গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ২০২৩ সালে পেয়েছিলেন ‘ডি’ গ্রেড। ফলে, ড. আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থান কিছুটা উন্নত হলেও এখনও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। মূলত আহসান এইচ মনসুরের নীতি দিক-নির্দেশনা যুক্তিসংগত হলেও বাস্তবায়নে গতি কম। তার নীতির ওপর জনগণের আস্থা এখনো পুরোপুরি ফিরে আসেনি।
অর্থনীতিবিদদের মতে, ‘সি’ গ্রেড মানে হচ্ছে নীতিগত দিক সঠিক পথে থাকলেও বাস্তব পরিবর্তনের ফল এখনো দৃশ্যমান নয়। মূল্যস্ফীতি, ঋণ অনিয়ম ও ডলার বাজারের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে না আসায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনো কঠিন পরীক্ষার মুখে রয়েছে।
এদিকে ড. আহসান এইচ মনসুর-এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক আইএমএফের সহায়তায় তিন বছর মেয়াদি ব্যাংক খাত সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এতে খেলাপি ঋণ কমানো, দেউলিয়া আইন হালনাগাদ করা এবং ব্যাংক পরিচালনায় জবাবদিহিতা বৃদ্ধি- এসব পরিকল্পনা থাকলেও বাস্তব অগ্রগতি তেমন একটা দৃশ্যমান না।
প্রসঙ্গত: গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি দায়িত্ব নেন এমন এক সময়ে, যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যাংক খাতের অনিয়ম, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি অর্থনীতিকে টালমাটাল করে রেখেছিল। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেপো রেট ৮.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করেন। এতে কিছুটা প্রভাব পড়লেও প্রবৃদ্ধি কমে ২০২৫ অর্থবছরে জিডিপি ৩.৯ শতাংশে নেমে আসে, যা গত দশকের গড় ৬ শতাংশের তুলনায় অনেক নিচে।