Wednesday 12 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অসময়ের ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে রংপুরের আমন চাষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১২ নভেম্বর ২০২৫ ০৭:৫৬

অসময়ের ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে রংপুরের আমন চাষ। ছবি: সারাবাংলা

রংপুর: অসময়ের ঝোড়ো বাতাস ও গত সপ্তাহের টানা দু’দিনের বৃষ্টিতে রংপুরের আমন ধান খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জমির কাঁচা-আধাপাকা ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এতে ফলন অর্ধেকে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

সূত্র বলছে, আবাদ হওয়া আমন ধানের মধ্যে অন্তত ৭৫ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে পানি জমে শীষ ভিজে যাওয়ায় পোকা-রোগের ভয় বেড়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ চলছে এবং কৃষকদের সহায়তার পরিকল্পনা হচ্ছে। আর আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন অসময়ের বৃষ্টি বেড়েছে, যা ফসলের ক্ষতি বাড়াচ্ছে।

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, সদরের পানবাড়ি, মিঠাপুকুরের ধাপের হাট, গঙ্গাচড়ার চওড়ার হাট এবং পীরগঞ্জের বিভিন্ন ক্ষেতে ধানগাছ লুটিয়ে পড়েছে। বিঘা-বিঘা জমির ফসল মাটিতে মিশে যাওয়ার আশঙ্কায় কৃষকরা হতাশ। সদরের কৃষক জয়ন্ত দাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘চার একর জমিতে কষ্ট করে আবাদ করেছি, কাটার সময়ই বৃষ্টি সব নষ্ট করে দিল। ফলন অর্ধেক হয়ে যাবে।’

বিজ্ঞাপন

মিঠাপুকুরের বৈরাতির কৃষক খিতিশ চন্দ্র বমর্ন সারাবাংলাকে বলেন, ‘নুয়ে পড়া ধানে পোকা ধরবে, চিটা হয়ে যাবে। এত পরিশ্রমের ফসল নষ্ট হতে বসেছে।’ গঙ্গাচড়ার গজঘন্টা হাবু গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান মিজান সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতবছর দাম কম পেয়েছি, এবার ভালো ফলনের আশা ছিল। কিন্তু, এই ঝড়-বৃষ্টি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।’

কাউনিয়ার স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক আতিকুর রহমান মুরাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টিতে কৃষি-দিনমজুর সবাই বিপর্যস্ত। কৃষি বিভাগের উচিত কৃষকদের সরকারি সহায়তা ও দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক সিরাজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘পাঁচ উপজেলায় ৭৫ হেক্টর ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, নুয়ে পড়া ধান গোছা বেঁধে রাখতে। এতে ক্ষতি কমবে। ক্ষতির নিরূপণ চলছে, সহায়তা দেওয়া হবে।’

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন এর অন্যতম কারণ। আর অসময়ের বৃষ্টি ফসলের ক্ষতি বাড়াচ্ছে।’

রংপুর কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৪০ হেক্টরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৯১৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।

সারাবাংলা/পিটিএম
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর