Friday 14 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইন্দুরকানী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
৩ মাস ধরে অচল পানি শোধনাগার প্লান্ট, দুর্ভোগে রোগীরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৪ নভেম্বর ২০২৫ ০৭:৫৯

ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পানির প্লান্ট। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুর: পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানি শোধনাগার (ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট) বিগত তিন মাস ধরে সম্পূর্ণরূপে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও উদ্যোগহীনতার কারণে এতদিনেও প্লান্টটি চালু হয়নি। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

জানা যায়, বিগত ২০২২ সালের মাঝামাঝিতে পিরোজপুর জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর প্রায় ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে এ পানির প্লান্টটি স্থাপন করেছিল। মূলত, হাসপাতালে ভর্তিকৃত ও চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ও আশেপাশের জনসাধারণের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে এ পানির প্লান্টটি স্থাপন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু চলতি বছরের ২৫ আগস্ট থেকে পানি শোধনাগারটি সম্পূর্ণভাবে অকেজো হয়ে পড়ে। এর ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা নিরাপদ পানির অভাবে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন। আর্থিকভাবে সচ্ছল রোগীরা বোতলজাত পানি কিনে ব্যবহার করলেও গরিব ও অসহায় রোগীরা পড়েছেন বিপাকে। এতে হাসপাতালে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের আশঙ্কাও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সেবাপ্রার্থীরা।

চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ের একমাত্র সরকারি হাসপাতালে সুপেয় পানির অভাব মেনে নেওয়া যায় না। ৩ মাস ধরে পানি শোধনাগার বন্ধ থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না—এটা তাদের উদাসীনতা ও সদিচ্ছার অভাবের ফল।’

স্থানীয় সচেতন মহল বলছে— একটি উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে পানি শোধনাগার দীর্ঘদিন অচল থাকা শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতাই নয়, এটি জনস্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি। হাসপাতালজুড়ে পানিবাহিত রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ইন্দুরকানীর বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, ‘সরকারের টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্লান্ট বন্ধ থাকায় আমরা শুধু কষ্টই পাচ্ছি না, দেশের সম্পদও নষ্ট হচ্ছে। দ্রুত এটি মেরামত করে চালু করা জরুরি।’

পানি প্লান্টের অপারেটর সুরঞ্জিত জানান, ‘এ পর্যন্ত আড়াই লাখ লিটার পানি শোধন করা হয়েছে। ফলে ফিল্টারের মেমব্রেন নষ্ট হয়ে গেছে। পানি বিক্রি করে ১ লাখ টাকা ফান্ডে জমা আছে, তবে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় মেমব্রেন পরিবর্তন করে প্লান্টটি চালু করা যাচ্ছে না।’

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মতিউর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার (টিএইচও) কাছ থেকে বিস্তারিত জানা যাবে।’

জেলা উপ-সহকারী স্বাস্থ্য প্রকৌশলী মইনুল ইসলাম জানান, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আমাদের কাছে চিঠি এসেছিল। আমরা জানিয়েছি, প্লান্টের মেমব্রেন আমাদের রেট লিস্টে নেই। তারা পানি বিক্রির টাকা থেকে মেমব্রেন কিনে প্লান্টটি চালু করতে পারতেন, এত সময় লাগার কথা নয়।’