কুষ্টিয়া: বাংলা সাহিত্যের অমর কথাসাহিত্যিক ‘বিষাদ সিন্ধু’-এর রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৮তম জন্মবার্ষিকী আজ । দিবসটি উপলক্ষে তার স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার কুমারখালির লাহিনীপাড়ায় দুই দিনব্যাপী জন্মোৎসব শুরু হয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এবং জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ উৎসব চলবে ১৩ ও ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত।
বাংলা সাহিত্যে মীর মশাররফ হোসেনের অবদান অনস্বীকার্য। ‘বিষাদ সিন্ধু’, ‘জমিদার দর্পণ’, ‘রাত্নাবতী’সহ তার অসংখ্য সাহিত্যকর্ম আজও পাঠক ও গবেষকদের অনুপ্রেরণা জোগায়। তার এসব অমূল্য সাহিত্যকর্ম সংরক্ষিত রয়েছে কুমারখালির লাহিনীপাড়ার স্মৃতি পাঠাগারে, যেখানে প্রতিদিনই সাহিত্যপ্রেমীরা ছুটে আসেন তার রচনা উপভোগে।
এ উৎসবকে ঘিরে বসেছে গ্রামীণ মেলা। বাহারি রঙের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। স্থানীয় শিল্পী, সাহিত্যপ্রেমী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নিচ্ছেন এ আয়োজনে।
লেখক ও গবেষক ইমাম মেহেদী বলেন, ‘বাংলা সাহিত্যে মীর মশাররফ হোসেনের সাহিত্যকর্মের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে তার রচনা সংরক্ষণ ও চর্চায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এখনো যথেষ্ট উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায়।’
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মীর মাহবুব উস সাদিক বলেন, ‘মীর মশাররফ হোসেনের সাহিত্যকর্ম সংরক্ষণে প্রশাসন এখন আরও সচেতন ও উদ্যোগী হয়েছে। নিয়মিত গবেষণামূলক কার্যক্রম বাড়ানো প্রয়োজন।’
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, ‘মীর মশাররফ হোসেনের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকল ধরনের ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে। আমরা যথাযথ মর্যাদায় এবং ব্যাপক উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করছি।’
১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়ার কুমারখালির লাহিনীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন মীর মশাররফ হোসেন। ১৯১২ সালের ১৯ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস রাজবাড়ী জেলার পদ্মদীতে।
বাংলা সাহিত্যের এই মহান কথাশিল্পীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এ উৎসব শুধুমাত্র সাহিত্যচর্চার নয়, বরং মীর মশাররফ হোসেনের চিন্তা ও মননকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার এক অনন্য উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।