Thursday 13 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করার আহ্বান জানিয়ে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টকে ট্রাম্পের চিঠি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৩ নভেম্বর ২০২৫ ১২:৫১

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করে দিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগগুলো রাজনৈতিক ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ও ‘অন্যায্য’ বলে সমালোচনা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজা যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার এক মাস পর বুধবার (১২ নভেম্বর) ট্রাম্প এ চিঠি পাঠান। তবে গাজায় নিয়মিত ইসরায়েলি হামলা এবং ত্রাণ প্রবেশে বাধার কারণে যুদ্ধবিরতি অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।

আইজ্যাক হারজগের কাছে পাঠানো চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট গাজা যুদ্ধে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করেন। যদিও যুদ্ধে অন্তত ২০ হাজার শিশুসহ ৬৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকেরা এটিকে ‘জাতিহত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

চিঠিতে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পুরোপুরি ক্ষমা করে দিতে আমি আপনার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি যুদ্ধের সময় শক্তিশালী ও দৃঢ়চেতা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ইসরায়েলকে এখন শান্তির পথে এগিয়ে নিচ্ছেন তিনি।’

ট্রাম্প আরও লিখেছেন, তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নেতানিয়াহুসহ মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে অব্যাহতভাবে কাজ করছেন, যাতে আরও অনেক দেশ ঐতিহাসিক আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেয়।

বুধবার ইসরায়েলের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম ট্রাম্পের ওই চিঠির ছবি প্রকাশ করেছে।

ইসরায়েলের প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি পাঠানোর মধ্য দিয়ে ট্রাম্প দেশটির স্থানীয় রাজনীতিতে নিজেকে আরও বেশি জড়ালেন। যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ায় তিনি নেতানিয়াহুকে পুরস্কৃত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে।

নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করে দেওয়ার এ আহ্বান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দক্ষিণপন্থী নেতাদের প্রতি ট্রাম্পের ক্রমবর্ধমান সমর্থনের দিকেও ইঙ্গিত করছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে এমনই এক নেতা হাভিয়ের মিলেইয়ের নেতৃত্বাধীন আর্জেন্টিনার অর্থনীতিকে দেউলিয়া হওয়া থেকে রক্ষায় চার হাজার কোটি ডলার ঋণসহায়তা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

চিঠিতে ট্রাম্প আবারও সেই ভ্রান্ত ধারণা পুনরাবৃত্তি করেছেন যে তিনি নাকি এ অঞ্চলে ‘কমপক্ষে তিন হাজার বছরের জন্য’ শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইসরায়েলের জন্ম ১৯৪৮ সালে। আর ফিলিস্তিন দখলের লক্ষ্য নিয়ে গঠিত জায়নবাদী আন্দোলনের সূচনা ১৮০০ সালের শেষ দিকে।

গত মাসে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে কথা বলার সময়ও ট্রাম্প নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগগুলো প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে তিনি ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো চিঠিতে বিষয়টি আরও স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করেছেন।

ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আইজ্যাক, আমাদের মধ্যে একটি দারুণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এ জন্য আমি কৃতজ্ঞ ও গর্বিত। জানুয়ারিতে আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরই আমরা একমত হয়েছিলাম যে আমাদের মূল লক্ষ্য হবে জিম্মিদের মুক্তি ও শান্তিচুক্তি সম্পন্ন করা। এখন যেহেতু আমরা এ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছি এবং হামাসকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছি; সময় এসেছে নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করে এ আইনি লড়াই শেষ ও ইসরায়েলকে ঐক্যবদ্ধ করার।’

ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট পদটি মূলত আনুষ্ঠানিক। তবে তার হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমার ক্ষমতা আছে। কিন্তু নেতানিয়াহুর বিচারপ্রক্রিয়া চলমান থাকায় রায় না হওয়া পর্যন্ত হারজগের পক্ষে নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করা সম্ভব নয়।

হারজগের দপ্তর ট্রাম্পের চিঠির জবাবে এক বিবৃতিতে জানায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি হারজগ গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করেন। পাশাপাশি ইসরায়েলের প্রতি তার অক্লান্ত সমর্থন, জিম্মিদের ফেরাতে তাঁর অবদান এবং মধ্যপ্রাচ্য ও গাজার নিরাপত্তা নিশ্চিতে তার ভূমিকার প্রশংসা করেন।

তবে বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলা হয়, ক্ষমা পেতে নেতানিয়াহুকে নির্ধারিত প্রক্রিয়া মেনে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর