Thursday 13 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তারল্য ঘাটতি কমাতে ৫ ব্যাংকের অর্থায়ন তহবিলের টাকা কর্তন স্থগিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:৩৭ | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:০৫

ঢাকা: একীভূতের প্রক্রিয়াধীন শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংকের চলতি হিসাব থেকে প্রাক্ অর্থায়ন, আবর্তিত অর্থায়ন ও বিশেষ অর্থায়ন খাতে আদায় হওয়া টাকা আপাতত কর্তন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সম্প্রতি (১০ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সভায় ডেপুটি গভর্নর ড. মো. কবির আহমেদ, নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, ব্যাংক পুনর্গঠন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জহির হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক ড. কাজী আরিফ উজ জামান, যুগ্ম পরিচালক মো. শামস্ তিবরীজ ভূইয়াসহ ৫ ব্যাংকের প্রশাসকদলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, একীভূতের আওতাধীন ৫ ব্যাংকের তারল্য ব্যবস্থাপনায় নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নানা উদ্যোগের পরও এসব ব্যাংকে চলতি তারল্যের উন্নতি ঘটছে না।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, এ প্রেক্ষিতে তারল্য ঘাটতির চাপ কমাতে একীভূতকরণের প্রক্রিয়াধীন এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক বিভিন্ন অর্থায়নের টাকা আদায় করলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের মূল চলতি হিসাব থেকে কোনো টাকা কেটে নেবে না।
ব্যাংকগুলোতে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসকদলের সুপারিশের প্রেক্ষিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্র জানায়।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘৫ ব্যাংকের তারল্য ঘাটতি সবার জানা। এসব ব্যাংকের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী, আমানতকারী, শেয়ারহোল্ডার সবার স্বার্থ দেখার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের। গভর্নর সবকিছু ক্লোজলি দেখভাল করছেন। বিশেষ করে তারল্য, খেলাপি আদায়ে বাড়তি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে৷ সেই ধারাবাহিকতায় তারল্য বাড়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন অর্থায়ন সুবিধার আদায় থেকে কর্তন বন্ধ ব্যাংকগুলোকে বাড়তি সুবিধা দেবে।’

উল্লেখ্য, ব্যাংকগুলো একীভূতকরণের অংশ হিসেবে গত ৫ নভেম্বর ব্যাংক ৫টির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওইদিন বিকেলেই ব্যাংকগুলোর দায়িত্ব বুঝে নেন প্রশাসকেরা। প্রশাসকদের প্রধান কাজ পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণে সব ধরনের তথ্য সরবরাহ করা। সেনাকল্যাণ ভবনে এসব ব্যাংক একীভূতকরণের জন্য স্থাপিত কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা সব তথ্য সমন্বয় করবেন।

এক্সিম ব্যাংকের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শওকাতুল আলম। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের দায়িত্বে রয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সালাহ উদ্দিন। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের দায়িত্ব নিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক মো. মোকসুদুজ্জামান। ইউনিয়ন ব্যাংকের দায়িত্ব নিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেক পরিচালক মোহাম্মদ আবুল হাসেম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, একীভূতের প্রক্রিয়াধীন পাঁচ ব্যাংক মিলে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের মূলধন হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে সরকার। আর আমানতকারীদের ১৫ হাজার কোটি টাকার শেয়ার দেওয়া হবে। একীভূত হতে যাওয়া পাঁচ ব্যাংকে ৭৫ লাখ আমানতকারীর বর্তমান জমা আছে ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে ঋণ রয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা বা ৭৬ শতাংশ এখন খেলাপি। সারা দেশে এসব ব্যাংকের ৭৬০টি শাখা, ৬৯৮টি উপশাখা, ৫১১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ৯৭৫টি এটিএম বুথ রয়েছে।

ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ৯৮ শতাংশ ঋণ খেলাপি ইউনিয়ন ব্যাংকের। পর্যায়ক্রমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামীর ৯৭ শতাংশ, গ্লোবাল ইসলামীর ৯৫ শতাংশ, সোশ্যাল ইসলামীর ৬২ দশমিক ৩০ শতাংশ ও এক্সিম ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪৮ দশমিক ২০ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর