Thursday 13 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্টের গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৪

টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্টের গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠান।

ঢাকা: টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাব আয়োজিত টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট সিজন-৯ এর গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিজেন্সি হোটেলে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে চূড়ান্ত প্রতিযোগীরা টেক্সটাইল ও পোশাক খাতের জন্য বিভিন্ন উদ্ভাবনী ধারণা এবং সমাধান উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে অতিথিরা প্রতিযোগীদের সৃজনশীলতার প্রশংসা করেন ও এই ধরনের উদ্ভাবন বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্পকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন–বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান, বিটিএমএ’র সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বিজেএমই’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিজিবিএ’র সহ-সভাপতি মো. মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, এফবিসিসিআই’র সাবেক প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান, আইটিইটি’র সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. এনায়েত হোসেন।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আইটিইটি’র আহ্বায়ক ও টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাব এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার এহসানুল করিম কায়সার । অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউএফটি) এর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. ইঞ্জিনিয়ার আইয়ুব নবী খান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ইনোভেশন, দক্ষতা (ইফিসিয়েন্সি) ও মেন্টরশিপের কোন বিকল্প নেই।’

তিনি বলেন, ‘দেশের টেক্সটাইল শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাকে আরও কার্যকরভাবে উৎপাদনমুখী করতে হবে। অনেক টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট আধুনিক ও দামি যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও সেগুলো কার্যকরভাবে ব্যবহার হচ্ছে না কারন শিল্প ও শিক্ষার মধ্যে সংযোগের অভাব রয়েছে।
যদি শিক্ষার্থীরা কারখানার মানসম্পন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাস্তব কাজের চুক্তিতে যুক্ত হতে পারে, তাহলে সত্যিকারের উন্নয়ন সম্ভাব। ইনোভেশনকে সিস্টেমেটিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রোডাক্টিভিটির (উৎপাদনক্ষমতা) সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাতে প্রচুর প্রযুক্তিগত (টেকনিক্যাল) ও নান্দনিক (এস্থেটিক) ইনোভেশনের সুযোগ রয়েছে। তবে নন–ভ্যালু অ্যাডেড কার্যক্রম বন্ধ করে সময় ও সম্পদের দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

টেক্সটাইল খাতকে জাতীয় সমৃদ্ধির ‘বাহন’ হিসেবে উল্লেখ করে বশির বলেন, ‘টেক্সটাইলের ইতিহাস গভীর—ম্যানচেস্টারে শিল্পবিপ্লব শুরু হয়েছিল টেক্সটাইল থেকেই—এবং বাংলাদেশও টেক্সটাইলের মাধ্যমে উচ্চমানের মূল্য সংযোজন অর্জন করে দেশের অর্থনীতি পরিবর্তন করতে সক্ষম।’

তিনি বলেন, টেক্সটাইল এমন এক যান যা একজন দেশকে ধনী করার সর্বশ্রেষ্ঠ উপায় হতে পারে। এটি শিল্প-নীতি ও মানবসম্পদ উন্নয়নে কেন্দ্রীয় গুরুত্ব দাবি করে।

বছরের পর বছর ধরে টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট শুধুমাত্র একটি প্রতিযোগিতা নয়—এটি এখন বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্পের তরুণ উদ্ভাবক, গবেষক ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বদের জন্য একটি উদ্ভাবনমূলক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।

এই বছর প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংশগ্রহণ করে। তাদের মধ্য থেকে বাছাই করা ১০০ জন শিক্ষার্থী জাতীয় পর্যায়ে ইনোভেশন মাস্টারমাইন্ড হিসেবে প্রশিক্ষণ, গ্রুমিং ও গবেষণা প্রকল্পে কাজের সুযোগ পান। এর মধ্য থেকে শীর্ষ ৭টি উদ্ভাবনী প্রকল্পকে চুড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়। শীর্ষ ৭টি উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলো হলো- শতভাগ কটন সিঙ্গেল জার্সি ফ্যাব্রিকে স্টিম খরচ হ্রাস। ইন্টেলিজেন্ট ইয়ার্ন ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্টের জন্য ক্লাউড ইন্টিগ্রেটেড লীন সিস্টেম। পানি, সময় ও রাসায়নিক ব্যবহারে সাশ্রয়ের লক্ষ্যে ডাইং প্রক্রিয়ার পুনঃনকশা। হালকা শেডের শতভাগ কটন নিট ফ্যাব্রিক ডাইংয়ে আরএফটি উন্নয়ন। শতভাগ কটন ডাইংয়ে পানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। রিং ও রোটর ইয়ার্নের জন্য দুটি ভিন্ন প্রযুক্তিতে প্রি-কনজিউমার বর্জ্য পুনর্ব্যবহার এবং শতভাগ কটন নিটেড ফ্যাব্রিক ডাইংয়ে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস।

প্রকল্পগুলোর মধ্যে, শতভাগ কটন সিঙ্গেল জার্সি ফ্যাব্রিকে স্টিম খরচ হ্রাস প্রথম পুরস্কার জিতেছে ১ হাজার ৫০ হাজার টাকা, শতভাগ কটন নিটেড ফ্যাব্রিক ডাইংয়ে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস দ্বিতীয় পুরস্কার জিতেছে এক লাখ টাকা এবং শতভাগ কটন ডাইংয়ে পানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা তৃতীয় পুরস্কার জিতেছে ৭৫ হাজার টাকা। বিচারকদের প্যানেল কর্তৃক নির্ধারিত এই ৭টি প্রকল্পের চূড়ান্ত গ্রুপ উপস্থাপনার পর বিজয়ীদের হাতে ট্রফি ও পুরস্কারের চেক হস্তান্তর করা হয়।

আইএমদের মধ্যে বুটেক্সের বায়েজিদ আহমেদ চ্যাম্পিয়ন অফ দ্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং ১ লাখ টাকা পুরস্কার জিতেছেন। বুটেক্সের মো. আব্দুল ওহাব শামস প্রথম রানার আপ এবং নিটারের মো. ইমতিয়াস ইমাম দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছেন এবং যথাক্রমে ৪ হাজার এবং ৩০ হাজার টাকা পুরস্কার পেয়েছেন।

এর আগে, শীর্ষ ১০০ ইনোভেশন মাস্টারমাইন্ড পেয়েছে ৩০ লাখ টাকার সমমূল্যের প্রশিক্ষণ ও অতিরিক্ত ১২ লাখ টাকার স্কলারশিপ সুবিধা। বিভিন্ন শিল্প বিশেষজ্ঞের নেতৃত্বে নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রকৃত সমস্যা সমাধানের জন্য ইনোভেশন মাস্টারমাইন্ডদের বিভিন্ন টেক্সটাইল এবং পোশাক কারখানায় মোতায়েন করা হয়েছে। গ্র্যান্ড ফিনালেতে, একটি পোস্টার প্রদর্শনী ছিল যেখানে সেরা ১২টি প্রকল্প প্রদর্শিত হয়েছিল এবং এর মধ্যে সেরা পোস্টারকে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর