রংপুর: আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি সারাদেশে ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি করলেও রংপুরে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের প্রধান সড়কগুলোতে ছিল যানজট, বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় এবং জনজীবন অন্যান্য দিনের মতোই ছিল স্বাভাবিক। কোথাও আওয়ামী লীগ বা এর অঙ্গসংগঠনের কোনো কর্মসূচি লক্ষ্য করা যায়নি।
দুপুরের দিকে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, রংপুর নগরীর ব্যস্ততম এলাকা যেমন সিটি বাজার, পায়রা চত্বর, জাহাজ কোম্পানি মোড়, কাচারী বাজার, ধাপ এবং মডার্ন মোড়ে যানবাহনের ঘিঞ্জি। বাসস্ট্যান্ডগুলোতে দূরপাল্লার বাসগুলো নির্ধারিত সময় মতো ছেড়ে গেছে এবং স্থানীয় যানপরিবহন ব্যবস্থা ছিল অন্য সব দিনের মতোই। যানজটে আটকে পড়া অটোচালক, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে কথা বললে জানা যায়, তারা কেউ আতঙ্কিত নন।
একজন অটো চালক বলেন, ‘রংপুর তো শান্তির শহর, এখানে রাজনৈতিক ভীতি কোনোদিনই ছড়ায় না।’
অটোচালক মনির হোসেন বলেন, ‘লকডাউনের কোনো ভয় নেই। সকাল থেকে অটো নিয়ে বের হয়েছি, সবকিছু আগের মতোই চলছে। কোথাও মিছিল বা মিটিং দেখিনি।’
কাপড়ের ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এমন কর্মসূচি দেওয়ার সাহসই নেই। তারা তো এখনো বিচারের মুখোমুখি। রংপুরের মানুষ তাদের সমর্থন করে না আর।’
স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর মতে, ‘মানুষ আর তাদের পক্ষ নেয় না; তারা এমন কর্মসূচি ডাকার অবস্থায় নেই।’
আওয়ামী লীগের লকডাউনের প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনগুলো রাজপথে নামছে গত দুদিন ধরেই। বৃহস্পতিবার ছাত্রজনতার প্ল্যাটফর্ম, শহীদ পরিবারের সদস্যরা এবং জুলাইযোদ্ধারা নগরীর প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। এসময় তারা আওয়ামী লীগের কর্মসূচি রুখে দেওয়া এবং নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ঘোষণা দেয়।
দুপুরে কারমাইকেল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ব্যানার নিয়ে আওয়ামী লীগের লকডাউনের প্রতিবাদে মিছিল করেছে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের কারমাইকেল কলেজ শাখাও এতে অংশ নিয়েছে, যাতে ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থীরাও যোগ দিয়েছে।
অন্যদিকে, বুধবার বিকেলে মহানগর ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে হাসিনার বিচারসহ আওয়ামী লীগকে মোকাবিলায় রাজপথে থাকার ঘোষণা দেয়। সেই রাতে রংপুর মহানগর যুবদলের নেতারা মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন দিয়ে একই ঘোষণা দেন।
রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি (আরএমপি) থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘রংপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ প্রশাসন সজাগ রয়েছে এবং একাধিক গোয়েন্দা টিম মাঠে কাজ করছে।’