ঢাকা: পরকীয়ার জেরে রাজধানীতে ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে (৪৩) হত্যা করে মরদেহ ২৬ টুকরা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনার মূলহোতা নিহতের বন্ধু জরেজুল ইসলামসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাতে ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে ড্রাম থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত আশরাফুলের গ্রামের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জের গোপালপাড়ায়। তার বাবার নাম মো. আব্দুর রশিদ ও মায়ের নাম মোছা. এছরা খাতুন।
গ্রেফতার আরেকজন হলেন- মূলহোতা জরেজুল ইসলামের প্রেমিকা শামীমা। তাকে আলামতসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩।
তালেবুর রহমান বলেন, ‘পরকীয়ার জেরে হত্যার পর আশরাফুলের মরদেহ কেটে ২৬ টুকরা করা হয়। এই ঘটনার মূলহোতা জরেজুল ইসলামকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
এর আগে আশরাফুল হক নিহতের ঘটনায় তার বন্ধু জরেজুলকে (৪২) প্রধান আসামি করে শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেছিল নিহতের ছোট বোন মোছা. আনজিনা বেগম।
শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘নিহত আশরাফুলের বন্ধু জরেজুলকে প্রধান আসামি করে তার বোন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাত আরও বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। সিসিটিভি ফুটেজসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে দ্রুত জড়িতদের শনাক্ত করতে কাজ চলছে।’
মামলার এজাহারে থেকে জানা যায়, আশরাফুল হক দিনাজপুরের হিলি বন্দর থেকে সারাদেশে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আলুসহ কাঁচামাল সরবরাহ করতেন। গত ১১ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে আসামি জরেজকে নিয়ে ঢাকায় আসেন তিনি। এরপর থেকে আশরাফুলের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
স্বজনদের সন্দেহ, আসামি জরেজ তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহযোগিতায় গত ১১ নভেম্বর রাত থেকে ১৩ নভেম্বর রাতের মধ্যে যেকোনো সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আশরাফুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যার পর মরদেহ মোট ২৬টি খণ্ডে খণ্ডিত করে গুম করার উদ্দেশ্যে দুটি নীল রঙের ড্রামের ভেতর ভরে রেখে অজ্ঞাতস্থানে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা।
এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ এসে ড্রাম দুটি খুলে অজ্ঞাতপরিচয় এক পুরুষের খণ্ডিত মরদেহ দেখতে পায়। তখন মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। পরে দুটি নীল রঙের ড্রাম থেকে মরদেহ বের করা হয়। ড্রামের মধ্যে চাল ছিল এবং কালো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো ছিল মরদেহের খণ্ডিত অংশগুলো।