খুলনা: বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)-এর চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহ্মেদ বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা না গেলে দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি বাধাগ্রস্ত হবে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে খুলনা সার্কিট হাউজে খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের কাছে বিআরটিএ ট্রাস্টি বোর্ড প্রদত্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের মোট দুর্ঘটনায় নিহত-আহতের ৩২ শতাংশই ৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণ-তরুণী। এদের মধ্যে রয়েছে দেশের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ। কিন্তু সড়কে প্রাণহানির কারণে আমরা সেই সম্ভাবনা হারিয়ে ফেলছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘সড়কের মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সম্মিলিত উদ্যোগ। অতীতের মতো আমরা আবারও উদাহরণ সৃষ্টি করতে চাই—যেমন এই জাতি করেছে ’৫২, ’৭১ ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে।’’
বক্তৃতায় তিনি জানান, পেশাদার গাড়িচালকদের দক্ষতা বাড়াতে মাষ্টার ট্রেইনার তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অচিরেই সারাদেশের চালক ও হেলপারদের প্রশিক্ষণের আওতায় এনে দক্ষ চালক তৈরির কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এসময় বিআরটিএ চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা কোনেো একক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কারণে ঘটে না। দুর্বল সড়কব্যবস্থা, অদক্ষ চালক, পথচারীর অসচেতনতা এবং আইন অমান্য—সবমিলেই দুর্ঘটনা ঘটে। এ অবস্থা থেকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’
সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ নিহত বা আহত হলে ৩০ দিনের মধ্যে বিআরটিএর নির্ধারিত ফরমে আবেদন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে বিআরটিএ কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপংকর দাশ। সঞ্চালনা করেন বিআরটিএ খুলনা বিভাগের পরিচালক মো. জিয়াউর রহমান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএর উপ-পরিচালক (ইঞ্জি.) তানভীর আহমেদ, খুলনা বিআরটিএর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) উসমান সরওয়ার আলম, বাগেরহাটের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) লায়লাতুল মাওয়া, মোটরযান পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা মোটর বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক বাবুল হোসেন, ইয়াসিন মোল্লা এবং খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহিদ খান। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ফজলুল হক মনি।
অনুষ্ঠানে খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দু’জনের স্ত্রী সানজিদা ইয়াসমিন সেতু ও মোসা. আকলিমা এবং বাগেরহাটের রিক্তা পারভিন ও মনোয়ারা বেগমের প্রত্যেককে পাঁচ লাখ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তর করা হয়।