রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত নবীন বরণ-২০২৫ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে চাকসু ভিপি ইব্রাহিম রনি বলেছেন, আমাদের যদি বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের চাহিদা কী তাহলে আমরা বলব, আমরা আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা চাই। আমাদের যদি জিজ্ঞেস করা হয় আমরা কী চাই? আমরা বলব, আমরা হলে একটা সিট চাই, মিলের ভর্তুকি বৃদ্ধি চাই, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চাই।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই নবীন বরণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ছাত্রশিবিরের পূর্ব ইতিহাসকে স্মরণ করে চাকসু ভিপি ইব্রাহিম রনি এ সময় বলেন, ‘১৯৮২ সালের ১১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল সেই প্রোগ্রামকে ভণ্ডুল করতে যারা সম্মিলিত আক্রমণ চালিয়েছিল এবং তাদের অপতৎপরতার কারণে শহিদ হয় আমাদের শহিদ সাব্বির ভাই। ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ সালে যখন আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে সারাদেশ অগ্নিগর্ভে পরিণত হয়েছিল তখন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালিন প্রক্টর শহিদ শামসুজ্জোহা স্যারের অবদানকে গভীরভাবে স্মরণ করছি। জুলাই-আগস্টের সকল শহিদকে গভীরভাবে স্মরণ করছি এবং যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তাদের জন্য দোয়া করছি।’
তিনি আরও জানান, ‘এতো এতো শিক্ষার্থী দেখে এখানে এসে মনটা সত্যিই ভালো হয়ে গেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমার সম্পর্কটা গভীর। আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করলেও আমি এখানকারই ছেলে। কলেজ পর্যায় থেকেই আমি এ ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করার কারণে খুব পরিচিত হয়ে গেছিলো সবকিছু। এ ক্যাম্পাসে তখন পড়ার সুযোগ হয়নি। রাজশাহী কলেজে কয়েকজন ছাত্রশিবিরকে চিনলে তার মধ্যে আমাকেও চিনতো ছাত্রলীগ।’
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরের পরিস্থিতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হয়তো ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা একটা পরিস্থিতিতে এসেছি কিন্তু যেমন রাষ্ট্র, যেমন ক্যাম্পাস আমাদের প্রত্যাশা ছিলো সেরকম ক্যাম্পাস এখনও পর্যন্ত আমরা বিনির্মাণ করতে পারিনি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে আমরা দেখেছি মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে তারাই পরে এই ছাত্র সংগঠনগুলো বিভিন্ন দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে গেছে। আমরা প্রত্যেকটা ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে চেয়েছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আমাদেরকে সহযোগীতা করবে কিন্তু তারাই আমাদের কাজে আরও বাধা সৃষ্টি করছে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনগুলো না রাষ্ট্রই আমাদেরকে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।’
অনুষ্ঠানে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে এ সময় আরও উপস্থিত ছিল ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম, প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবি শিবিরের সাবেক সভাপতি আব্দুল মোহাইমিন, কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেনসহ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন।