কুবি: বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখার দায়িত্ব হস্তান্তর, শপথ পাঠ ও পুরস্কার বিতরণী-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের ইংরেজি বিভাগের ২০৮ নম্বর কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ২০২৪-২৫ কার্যবর্ষের সভাপতি মোহাম্মদ রাজীবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সঞ্চালনা করেন শাখার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদিয়া আফরোজ। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও তরুণ লেখক ফোরাম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ২০২৪-২৫ কার্যবর্ষের উপদেষ্টা ড. নাহিদা বেগম, ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মো. ইমরান হোসেন, লেখক ফোরাম কুবি শাখার সাবেক সভাপতি ও ২০২৪-২৫ কার্যবর্ষের উপদেষ্টা সানজিদা ইয়াসমিন লিজা। এছাড়া তরুণ লেখক ফোরামের পুরাতন ও নতুন কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তরুণ লেখক ফোরাম, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ২০২৪-২৫ কার্যবর্ষের সাধারণ সম্পাদক আল মাসুম হোসেন প্রথমে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। এরপর আমন্ত্রিত অতিথিদের বই এবং উপদেষ্টাদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। পরে শাখার ২০২৪-২৫ কার্যবর্ষের সেরা লেখক ইয়াছিন আরাফাত, সেরা সংগঠক আল মাসুম হোসেন, উদীয়মান সেরা লেখক মো. মারুফূর রহমান ক্রেস্ট গ্রহণ করেন।
এছাড়া চলতি বছর মহান শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে ভিডিও প্রতিযোগিতায় তিনজন বিজয়ীকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। বিজয়ীরা হলেন—সাইমা আক্তার (প্রথম), ইশরাত জাহান লিয়া (দ্বিতীয়), মো. রিমেল (তৃতীয়)। পরে সদ্য বিদায়ী কমিটির সদস্যদের ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
এদিকে শাখার ২০২৫-২৬ কার্যবর্ষের সদস্যদের শপথ পাঠ সভাপতি আল মাসুম হোসেন। এরপর নতুন কমিটি সদস্যদের নিয়োগপত্র ও ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। সর্বশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘জ্ঞান দুইভাবে আসে—কেউ চর্চা করে, কেউ উৎপাদন করে। লেখকরা জ্ঞান উৎপাদন করেন এবং শিক্ষকরা জ্ঞান চর্চা করেন। সেজন্য আপনাদের ইতিহাস, রাজনীতি, সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে বেশি পড়াশোনা করতে হবে, কারণ যে ভালো পাঠক, সেই ভালো লেখক। আমাদের চিন্তাভাবনা ও লেখনি হবে বহুমুখী। আপনাদের কলম হবে শানিত।’
লেখক ফোরামের উপদেষ্টা ড. নাহিদা বেগম বলেন, ‘আমরা যদি একটা বিশ্ববিদ্যালয়কে সচল ও প্রগতিশীল রাখতে চাই, তাহলে সবার আগে দরকার সচলতা। সেই সচলতা সংগঠন এনে দিবে। একটা বাচ্চা যখন ছোট থাকে তখন হোঁচট খায়, পা ভাঙে, দাঁত ভাঙ্গে-অনেক শারীরিক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে থাকে সে। যখন আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে, তখন প্রতিবন্ধকতাগুলো আর থাকে না। একইভাবে একটি সংগঠনের শুরুর দিকে ভুল দিকগুলো মাপ করা হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা আর ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখা হয় না।’
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, ‘আমরা আসলে বিভক্তকরণ বেশি পছন্দ করি কিন্তু বিভক্তকরণ আমাদের কিছু দেয় না। আমাদের উচিত কোন গল্প উপন্যাস প্রকাশ করার আগে কারো কাউকে দেখেই নেওয়া। বাক্য বানানের ক্ষেত্রে সচেতন থাকা। এই ভাষাটাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য চেষ্টায় যেন ভুল না হয়। আর এই সময়টা হচ্ছে বিভিন্ন প্রোগ্রাম আয়োজন করা। বিভিন্ন প্রোগ্রামের মাধ্যমে কাজকে আরো সমৃদ্ধ করা।’
সদ্য বিদায়ী সভাপতি মোহাম্মদ রাজীব বলেন, ‘আমাদের সংগঠনটি ছোট, তবে আমি ছোটকে বড় করে তোলার চেষ্টা করি। সাংবাদিকতার হাত ধরে এই সংগঠনে আমার যাত্রা। আমাদের শিক্ষকরা সবসময় আমাদের সহযোগিতা করেছেন; তাদের সহযোগিতা ছাড়া কোনো কাজ সম্ভব হয় না। যারা যে দায়িত্ব পেয়েছেন, সবাই তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন। এটি লেখকদের সংগঠন, তাই এখানে সবসময় সক্রিয় থাকতে হবে। আপনারা সংগঠনকে সক্রিয় রাখবেন এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করে যাবেন।’