ওয়ারী ছিনতাইয়ের নেপথ্যে ‘ছোট ভাই’
১২ জুলাই ২০১৮ ১৮:২৭ | আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ১৯:৩৬
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় টিপু সুলতান রোডে গত ২৫ জুন দিনের বেলায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে ১৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার রহস্য বের করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় বাদীর আপন ছোট ভাই এনামুল হাসান রাজনের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। মূলত ভাইয়ের যোগসাজসেই ৬ জন মিলে টাকা ছিনতাই করে বলে জানায় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী জোনাল টিমের সহকারী কমিশনার ইমাম হাসান সারাবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
সহকারী কমিশনার বলেন, গত ২৫ জুন ওয়ারী টিপু সুলতান রোডে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শাখা থেকে মোহাম্মদ হোসেন বাবুল তার কর্মচারী বাবুল দাসকে নিয়ে ১৫ লাখ টাকা তুলে ব্যাগে নিয়ে ধোলাইখালের দিকে যাচ্ছিলেন। টিপু সুলতান রোডের শেষ মাথায় যেতেই চারজন ছিনতাইকারী মোটরসাইকেলে করে রিকশার গতি রোধ করে সামনে দাঁড়ায়। তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে টাকার ব্যাগসহ তাদের মোটরসাইকেলের মাঝখানে বসিয়ে চোরাগলিতে নিয়ে যায়। সেখানে বাবুল দাসের বগলে ছুরিকাঘাত করে টাকার ব্যাগ নিয়ে চলে যায়। এ সময় তাদের সাথে ডিবি জ্যাকেট, হাতকড়া ও ধারালো ছুরি ছিল।
ওইদিনই ওয়ারী থানায় মামলা হলে ডিবি পুলিশ তদন্তে নামে। তদন্তে জানা যায়, এ ঘটনায় বাদীর আপন ছোট ভাই রাজনের জড়িত থাকার কথা। পরে রাজনকে গত ৮ জুলাই গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে রাজন ১৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্য মতে, রাজনের বন্ধু খৈয়াম পারভেজকে খিলগাঁও পূর্ব গোড়ান থেকে ও জুয়েল মিয়াকে রাজধানীর বংশাল থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এসময় রাজনের কাছ থেকে এক লাখ ২০ হাজার ও পারভেজের কাছ থেকে এক লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। আর জুয়েলের কাছে থাকা নীল রংয়ের একটি অ্যাপাচী মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। বাকি আরও তিনজন পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।
গতকাল (১১ জুলাই) ঢাকা মহানগর হাকিমের আদালতে রাজন, জুয়েল ও পারভেজ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পলাতক ধরতে তাদের নাম প্রকাশ করেননি ডিবি কর্মকর্তা।
আদালতের জবানবন্দিতে জুয়েল মিয়া বলে, ‘বাবুলের ছোট ভাই রাজনের কথা মতো পারভেজ টাকা ছিনতাইয়ের জন্য জুয়েলকে মোবাইলে কল করে ডাকেন। তার কথা মতো আরও দুই জন মোটরসাইকেল নিয়ে টিপু সুলতান রোডে আসেন। রাজন ঘটনার সময় বাড্ডায় ছিলেন। চার জন মিলে টাকা ছিনতাইয়ের পর তারা অন্য আরেক বড়ভাইয়ের বাসায় গিয়ে ওঠে। সেখানেই টাকা ভাগাভাগি হয়।’
পারভেজও জবাননন্দিতে রাজনের নির্দেশনার কথা স্বীকার করেছেন। তাছাড়া ব্যাংক থেকে টাকা তুলবেন সে কথাও ফোন করে জানিয়েছেন রাজন। আর রাজন তার জবানবন্দিতে বলেছেন, ভাইয়ের টাকা তোলার বিষয়টি তিনি অন্যান্য সবাইকে জানিয়ে দেন। তারও আগে ডিবি পরিচয়ে ভাইয়ের টাকা ছিনতাই করা হবে সেই পরিকল্পনা করেন।
ডিবির সহকারী কমিশনার বলেন, মামলাটি আনডিটেকড অবস্থায় ছিল। প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং সিসিটিভির সহায়তায় আসামিদের চিহ্নিত করা গেছে। আপন ভাইসহ তিনজন গ্রেফতার হয়েছে। জবানবন্দিও দিয়েছে। বাকি যারা পলাতক আছেন তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
আরও পড়ুন: চাকরির নামে প্রতারণা, গ্রেফতার ১৩
সারাবাংলা/ইউজে/এমও