Monday 17 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এক মাসে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই রাকসুর

রাবি করেসপন্ডেন্ট
১৭ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:৪০ | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:২৫

রাকসু ভবন। ছবি: সারাবাংলা

রাবি: রাকসু নির্বাচনের এক মাস কেটে গেছে। ৩৪ বছর পর পুনরায় কার্যক্রমে ফেরা এই ছাত্রসংসদকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ছিল ব্যাপক—হল ও একাডেমিক ভবনের দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলো সমাধান করা, শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া এবং সক্রিয় ভূমিকা রাখা। কিন্তু এক মাস অতিক্রান্ত হলেও এখনো উল্লেখযোগ্য কিংবা দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

এদিকে রাকসুর ২৩টি পদের ২০টিতেই ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে বিজয়ী হয়। তারা তাদের ইশতেহারে ১২ মাসে ২৪ দফা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। যেখানে তারা সাতটি বিষয়কে ‘হ্যাঁ’ ও সাতটি বিষয়কে ‘না’ সম্বোধন করেছিল। তাদের প্রথম মাসের সংস্কারে ছিল জুলাইয়ের আকাঙ্খা বাস্তবায়ন, মানসম্মত খাবারের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা। নেতৃবৃন্দরা বলছেন, তারা তাদের কাজ শুরু করেছেন। তবে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে।

বিজ্ঞাপন

এবিষয়ে জানতে চাইলে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জিহাবুর ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৬ বছর পর অনুষ্ঠিত রাকসু নির্বাচন নিয়ে আমাদের অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কিছু ছোটখাটো কাজ শুরু করলেও বড় ধরনের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ইশতেহারের প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন হবে।’

রাকসুতে ছাত্রদলের প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা শেখ নূর-উদ্দীন আবীর বলেন, ‘নির্বাচনের এক মাস পার হলেও এখনো কোনো দৃশ্যমান কার্যক্রম শুরু হয়নি। এটি দুঃখজনক এবং শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা উপেক্ষার শামিল। রাকসু পুনরুজ্জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধান ও গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিত করা। কিন্তু নির্বাচন শেষে পুরো প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন জাগছে—এটি কি শুধুই আনুষ্ঠানিকতা ছিল?’

তিনি আরও বলেন, ‘রাকসুকে দ্রুত সক্রিয় করতে হবে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং ক্যাম্পাসের আবাসন, নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক সংকট সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।’

প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগ এনে রাকসুর সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘শপথ নেওয়ার পর ২২ দিন হয়ে গেলেও আমরা প্রশাসনের কোনো সহায়তা পাইনি। তাদের সহযোগিতা ছাড়াই আন্তঃহল বিতর্ক উৎসবের প্রস্তুতি চলছে। খাবারের মান নিয়মিত মনিটরিং করায় দোকানিরা এখন অনেক সচেতন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা মেয়েদের জিমনেসিয়াম চালু করেছি, বাফুফে থেকে খেলাধুলার সরঞ্জাম পেয়েছি, মাঠ সংস্কার, নারী শিক্ষার্থীদের পোশাক–সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। এ মাসের ২৩ তারিখ ক্লিন ক্যাম্পাস কর্মসূচি রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভিসি স্যার চীন সফরে থাকায় অনেক কাজ আটকে আছে। তার স্বাক্ষর ছাড়া বাজেট পাস হচ্ছে না। আমাদের প্রায় ৫৪টা এজেন্ডা আটকে আছে।’

রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘আমরা বেশ কিছু কাজ করেছি এবং কিছু কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু প্রশাসনিকভাবে সহযোগিতা না পাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। রাকসুর বরাদ্দ বুঝে পেলে কাজগুলো দ্রুত এগোতে পারত। এই মাসেও ফিল্টার স্থাপন, রুয়ার থেকে ই–কার প্রাপ্তি, সাহিত্য ও বিতর্ক অনুষ্ঠান আয়োজনসহ ইশতেহারের প্রতিশ্রুত কাজগুলো শুরু করার চেষ্টা করছি।’

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ১৭ অক্টোবর। এতে, ভিপি পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ এবং জিএস পদে নির্বাচিত হন সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৩টি পদের মধ্যে ২০টি তে ও ১৭টি হল সংসদের ভিপি-জিএস ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে নির্বাচিত হন।

সারাবাংলা/এনএমই/জিজি
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর