ঢাকা: আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থীদের আচরণবিধি প্রতিপালনে ইসিকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইসির সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক নেতারা।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে তৃতীয় দিনের ১ম ধাপের ৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন তারা। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের তৃতীয় দিনে সকালের পর্বে অংশ নেয় বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল)।
সংলাপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা জরুরি।’
সেসঙ্গে অবৈধ ও কালো টাকার ব্যবহার বন্ধের ওপর জোর দেন তিনি।
আচরণবিধিতে প্রচারণায় পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট, ফেস্টুন ও পলিথিন-পিভিসি সামগ্রী নিষিদ্ধের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এটি বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের সভাপতি আবু লায়েস মুন্না বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও সংবিধানের ১৫৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের আইন প্রণীত হয়নি, যা কমিশনকে শক্তিশালী করার পথে বড় ঘাটতি। এই আইন দ্রুত পাস করে কমিশনের নিয়োগপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও সাংবিধানিক করতে হবে।’
বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে প্রার্থিতা বাতিলের ঘটনার নজির অতীতে নেই; তাই কমিশনের কঠোর ক্ষমতা ও প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি।’
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, ‘বর্তমান ডিজিটাল যুগে গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে আচরণবিধি লঙ্ঘন চিহ্নিত করা সহজ; তাই লক্ষ্য হওয়া উচিত লঙ্ঘন যেন না ঘটে বা কম ঘটে।’ আচরণবিধির ব্যাপক প্রচার, সোশ্যাল মিডিয়ার মনিটরিং এবং লঙ্ঘন শনাক্ত হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের পরিবেশ তৈরির ওপর তিনি জোর দেন।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে দেশে সত্যিকার অর্থে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি, যার ফলে সাধারণ মানুষের ভোটের প্রতি আস্থা ক্রমেই কমে গেছে। জনগণ এখন প্রশ্ন তোলে—‘কেন ভোট দেব, ভোট দিয়ে কী হবে?’ নির্বাচনের প্রতি এই অনাস্থা জাতির জন্য উদ্বেগজনক, কারণ গণভোট ও মানুষের ভোটাধিকারকে সামনে রেখেই দেশ স্বাধীন হয়েছিল।