Monday 17 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ‘না’ বলল হেফাজত-জামায়াত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৭ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:২১ | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ২০:২৪

চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর ইজারার চুক্তির প্রতিবাদ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামী। হেফাজত বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই বিদেশি সংস্থার হাতে দেওয়া যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। আর জামায়াতে ইসলামী পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে হেফাজতে ইসলামের আমীর শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান এবং চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলামের পাঠানো আলাদা বিবৃতিতে সংগঠন দুটির এ অবস্থান জানানো হয়েছে।

হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদীর পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির আমির ও মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক শক্তির প্রাণকেন্দ্র বন্দর। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা শক্তির হাতে ব্যবস্থাপনাগতভাবে স্থানান্তর করার যেকোনো উদ্যোগ রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে স্পষ্ট হুমকি এবং জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিতে পারে। এ ধরনের পদক্ষেপ দেশের ভবিষ্যৎ, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কৌশলগত স্থাপনা পরিচালনার নামে কোনো বিদেশি আধিপত্য, বিশেষ সুবিধা বা গোপন চুক্তি জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পূর্ণ অসংগত ও অগ্রহণযোগ্য।’

বিজ্ঞাপন

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘জনগণের অগণিত ত্যাগ ও শ্রমে গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম বন্দর–সম্পর্কিত যেকোনো সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা, জনআস্থার প্রতি সম্মান এবং রাষ্ট্রীয় কঠোর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে গ্রহণ করতে হবে। জনগণের অজান্তে বা গোপন আলোচনা ও চুক্তির মাধ্যমে দেশের সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি। জাতীয় সম্পদ রক্ষার প্রশ্নে কোনো শিথিলতা, সমঝোতা বা বিদেশি চাপ গ্রহণযোগ্য নয়। চট্টগ্রাম বন্দর দেশের, দেশেরই থাকবে। এটি রক্ষায় প্রয়োজন হলে সর্বোচ্চ নাগরিক সতর্কতা ও গণআন্দোলন গড়ে তুলতে প্রস্তুত রয়েছি।’

অন্যদিকে নগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বিবৃতিতে বলেন, ‘একইদিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে গোলকধাঁধাঁ তৈরি করে পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের বন্দরের মালিকানা তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিদেশি নাগরিক লুৎফে সিদ্দিকী, আশিক চৌধুরীদের বন্দরের দায়িত্ব দিয়েছিলেন ড. ইউনূস, জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে যাদের ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতাও ছিল না। তারাই বন্দর সেক্টরে পতিত স্বৈরাচার ও নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী আধিপত্য চাপিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। এভাবে অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতি করে দিয়ে তারা চলে যাবেন বিদেশে।’

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে নেওয়া সিদ্ধান্ত এগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘লালদিয়ার চর যে প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হচ্ছে, সেই এপিএম টার্মিনালের সঙ্গে কনটেইনার ব্যবসায় জড়িত শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয়। তিনি এপিএম টার্মিনালের স্থানীয় অংশীদার। ফলে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আত্মীয় হতে যাচ্ছেন আগামী ৩০-৪০ বছরের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে আধুনিক টার্মিনালের অন্যতম মালিক। এরপর পানগাঁও টার্মিনালের দায়িত্ব যে সুইস কোম্পানীকে দেওয়ার জন্য সরকার চুক্তি করছে, তার স্থানীয় এজেন্ট আওয়ামী নেতা সাবের হোসেন চৌধুরী।’

‘নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে ডিপি ওয়ার্ল্ড, যার স্থানীয় অংশীদারও সাবের হোসেন চৌধুরী। এভাবে পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের হাতে বন্দরের মালিকানা তুলে দেওয়ার জন্য চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা জীবন দেয়নি। পরিষ্কার ভাষায় হুঁশিয়ার করতে চাই- জুলাই শহিদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে ড. ইউনূসকে।’

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর