চট্টগ্রাম ব্যুরো: ‘তারে (শেখ হাসিনা) একবার কেন, দশবার ফাঁসি দিলেও তো আমার ছেলেকে আমি আর ফেরত পাব না। তবে ফাঁসির রায়টা দ্রুত কার্যকর হলে মনে শান্তি পাব, আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে শহিদ শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ শান্ত’র মা মোছাম্মৎ কোহিনূর আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ কথা বলেছেন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) চব্বিশের অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। রায়ের পর সারাবাংলাকে প্রতিক্রিয়া জানান শান্ত’র বাবা ব্যবসায়ী জাকির হোসেন ও মা স্কুলশিক্ষিকা কোহিনূর আক্তার।
কোহিনূর আক্তার সারাবাংলাকে বলেন, ‘শেখ হাসিনার একবার কেন, কয়েকবার ফাঁসি হওয়া দরকার। এমন একজন খুনিকে কয়েকবার ফাঁসি দিলেও তার অপরাধের সাজা শেষ হবে না। কিন্তু তারে তো দশবার ফাঁসি দিলেও আমি আর আমার ছেলেকে ফিরে পাব না। তবুও রায় হয়েছে, রায়টা যেন দ্রুত কার্যকর হয়। তাহলে আমি মনে শান্তি পাব, আমার ছেলের আত্মাও শান্তি পাবে।’
‘আমি আজ ১৬ মাস সন্তানহারা। আমার ছেলেকে আমার বুক থেকে কেড়ে নিয়েছে খুনি শেখ হাসিনা। সরকারকে আমি বলব, আপনারা দ্রুত তাকে দেশে এনে ফাঁসি কার্যকর করেন। আর কোনো মায়ের বুক যেন কোনোদিন খালি না হয়, সন্তান হারানোর কষ্ট নিয়ে কোনো মাকে যাতে আর দিন পার করতে না হয়।’
শান্তর’র বাবা জাকির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘যে রায় হয়েছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট। রায়টা দ্রুত কার্যকর করা হোক, এটাই আমার চাওয়া। আমার ছেলের খুনের ঘটনায় মামলা আছে। সেই মামলার আসামি যারা আছে, তাদের গ্রেফতার করা হোক। মামলাটার বিচার যাতে দ্রুত শেষ হয়। শুধু আমার ছেলে হত্যার মামলা না, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সব হত্যার বিচার যাতে হয়, সরকারের কাছে সেই দাবি জানাই। আর আমরা যারা শহিদ পরিবার আছি, সরকার যেন আমাদের নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’

শান্তর’র বাবা জাকির হোসেন। সারাবাংলার ফাইল ছবি।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরুর পর ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুরে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে ফয়সাল আহমেদ শান্ত (২০) নিহত হন। শান্ত নগরীর ওমরগণি এমইএস কলেজের বিবিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তাদের বাড়ি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নে। তবে বসবাস করতেন চট্টগ্রাম নগরীতে।