ভোলা: অ্যাপ এ পরিচয়, এরপর প্রেম। সেই প্রেমের টানে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে চীন থেকে প্রেমিকার বাড়ি ভোলায় এসেছেন এক যুবক।
ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভোলার খালের সংলগ্ন স্লুইজ গেট এলাকায় জিন্না ডাক্তার বাড়িতে এমন ঘটনা ঘটেছে।
প্রেমিকার বাড়ি ওই এলাকার। তার নাম ফেরদৌস আক্তার (২০)। তিনি মো. আমানউল্লাহর সপ্তম সন্তান। আর প্রেমিক লুইজাউ চীনের সিচুয়ান প্রদেশের লুঝৌ শহরের গুলিন কাউন্টির তুচেং গ্রামের রোশন লুন ও হুয়াং কিয়াংর প্রথম সন্তান।
সরেজমিনে জানা গেছে, চীন থেকে রোববার (১৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টার দিকে ঢাকায় এয়ারপোর্টে এসে পৌঁৗছেন। সেখানে রিসিভ করেন প্রেমিকা ফেরদৌস, তার মা মরিয়ম বেগম ও দুলাভাই নুর হোসেন কারিম। এরপর ওইদিনই তারা বিকেলে ঢাকা সদর ঘাট থেকে লঞ্চ যোগে ভোলার উদ্দেশে রওনা দেন। রাত ২ টার দিকে তারা জিন্না ডাক্তারের বাড়িতে আসেন।
প্রেমিকা ফেরদৌস আক্তার জানান, প্রায় একবছর আগে ওয়ার্ল্ড টক নামে একটি অ্যাপের মাধ্যমে চীনের লুইজাউর সঙ্গে তার পরিচয়। এর পর কথা বলতে থাকেন। কথা বলার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর পর তারা দু’জন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। চীনা যুবক বাংলাদেশে এসে ফেরদৌসকে বিয়ে করে নিয়ে যাবেন চীনে- এজন্য তাকে পাসপোর্ট করতে বলেন। প্রায় তিন মাস আগে তিনি পাসপোর্ট করেন।
তিনি বলেন, ‘আজ আমার ভালোবাসার মানুষ আমার জন্য হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে বিয়ে করতে এসেছে। আমি তাকে বিয়ে করবে। আমি তাকে অনেক বিশ্বাস করি। আমি মনে করি আমার ভালোবাসার অমর্যাদা হবে না। সে আমাকে অনেক সুখে রাখতে। আমিও তাকে অনেক ভালোবাসি।’
ফেরদৌস আক্তারের মা মরিয়ম বেগম বলেন, ‘চীনা ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক আমি বেশ কয়েক মাস আগে জেনেছি। মেয়ে আমাকে সব বলেছে। এখন ছেলে এসেছে, আমরা তাদের বিয়ে দেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘মেয়ে সুখে থাকলেই আমাদের সুখ। আশা করি ছেলে ভালো হবে।’
প্রেমিক লুইজাউ বলেন, ‘আমি দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড়। চীনের সিচুয়ান প্রদেশের চেংদুতে পোশাক ও জুতার শোরুমের ব্যবসা আছে আমার। অ্যাপে আমার সঙ্গে ফেরদৌস আক্তারের পরিচয়। তার সঙ্গে কথা বলে আমি তাকে ভালোবেসে ফেলেছি। আমি ওকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসার মানুষকে আমি বিয়ে করতে চাই। যতদিন বাঁচব ওকে নিয়েই সংসার করব।’
ভোলা মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা শুনেছি। পরে চীনা যুবক ও ওই তরুণীর মা-বাবা ও আত্মীয় স্বজন থানায় এসে আমাদের বিষয়টি জানিয়েছে। ছেলেটি বৈধভাবে বাংলাদেশে এসেছেন। এখন ওই চীনা যুবক ওই বাড়িতেই আছেন।’