ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ছিলেন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ের এক অবিচল যোদ্ধা, যার জীবনের সবচেয়ে বড় আক্ষেপ-‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন’ দেখে যেতে না পারা।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানের লেকশো হোটেলে মওদুদ আহমেদের লেখা “Demise of Democracy” বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ‘মওদুদ ভাই সারাটা জীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়ে গেছেন। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বৈরশাসনের পতন হবে, এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সেই স্বপ্ন বাস্তবে দেখার আগেই তিনি চলে গেলেন।’
নিজের রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ফখরুল জানান, ২০১২ সালে পুরনো নাজিমউদ্দিন রোড কারাগারে একসঙ্গে বন্দি থাকা অবস্থায় তিনি কাছ থেকে দেখেছেন মওদুদ আহমেদের লেখালেখির প্রতি অপরিসীম অনুরাগ। জেলে পৌঁছেই তিনি রুম নম্বর-১-এ গিয়ে বলেছিলেন—‘আমি জেলের সময়টুকু পুরোটা লিখতেই চাই।’ লেখার প্রতি তাঁর এতটা নিবেদন আমাকে মুগ্ধ করেছিল, বলেন ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় রক্ষীবাহিনীর হাতে খুলনার এক কমিউনিস্ট নেতা ও তাঁর পরিবারের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় তরুণ আইনজীবী মওদুদ আহমেদ হেবিয়াস করপাস রিট করে তাদের মুক্ত করেছিলেন। “মানুষের অধিকারের প্রতি তাঁর যে মানবিক দায়বদ্ধতা ছিল—এ ঘটনা তারই প্রমাণ।”
কোভিড-১৯ সময়কার স্মৃতি উল্লেখ করে ফখরুল জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মওদুদকে দেখতে যেতে না পারা তার জীবনের আক্ষেপগুলোর একটি। “বিধিনিষেধের কারণে দেখা করতে পারিনি। আজও সেই আফসোসটা রয়ে গেছে,” বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে তরুণদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘যারা আজ দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাদের ইতিহাস জানা জরুরি। মওদুদ আহমেদের মতো নেতাদের লেখা পড়লে তারা আরও পরিপক্ব হবে।’
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।