Tuesday 18 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অস্ট্রেলিয়া-তুরস্কের না, কপ-৩১ নিয়ে সংশয়!

উজ্জল জিসান স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:৩০

অস্ট্রেলিয়া-তুরস্কের না, কপ-৩১ নিয়ে সংশয়! ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

বেলেম, ব্রাজিল থেকে: সাধারণত একবছর আগে ঘোষণা করা হয় পরবর্তী কপ কোথায় হবে। সেই হিসাবে গতবছর আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত কপ-২৯-এ ঘোষণা করা হয়েছিল পরবর্তী কপের গন্তব্য ব্রাজিল। ওই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫ সালের কপ-৩০ ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যদিও গতবার ব্রাজিলের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া ও তুরস্ক চেয়েছিল এবারের কপ আয়োজন করতে। কিন্তু সেবার ব্রাজিল জিতে যায়। তবে ২০২৬ সালে কপ-৩১ অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছে এটা মোটামুটি নিশ্চিত ছিল।

কিন্তু বৈশ্বিক বাস্তবতা ও ব্রাজিলের কপ আয়োজন মোটামুটি ব্যর্থ হওয়ায় পরবর্তী আয়োজনের ইচ্ছে থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সেইসঙ্গে তুর্কিও কপ-৩১ আয়োজনের আগ্রহ থেকে ফিরে এসেছে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) অস্ট্রেলিয়া প্রথমে নিজেদের কপ আয়োজনের ইচ্ছে থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয়। এর পরপরই আরেক স্বাগতিক দেশ তুরস্কও তাদের আগ্রহ থেকে পিছিয়ে যায়। আর এতেই কপ-৩১ আয়োজন নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। আগামীতে আসলেই কি কপ অনুষ্ঠিত হবে?

বিজ্ঞাপন

করপোরেট দুনিয়ার নেগোশিয়েট গ্রুপগুলোর অভিযোগ, কপকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে ধনী রাষ্ট্রগুলোর একরোখা সিদ্ধান্ত সবসময়ই ছিল। আজ তারা সফল হতে চলেছে। ধনী দেশগুলোর একতরফা কার্বন নিঃসরণের ফলে গরিব রাষ্ট্রগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার। বাংলাদেশও এর থেকে রেহাই পাচ্ছে না। আইলাসহ বেশ কয়েকটি সামুদ্রিক ঝড় এর বড় প্রমাণ।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, প্রতিবছর কপ আয়োজন থেকে বিশ্বের দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সাহায্য দেওয়া হয়ে থাকে। সেইসঙ্গে আগামীতে কীভাবে প্রকৃতির ক্ষতিকর প্রভাবগুলো দূর করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব কীভাবে মোকাবিলা করা হবে তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু, কপ আয়োজনই যদি না হয় তাহলে কে কার জন্য লড়াই করবে, কীভাবে দরিদ্র-ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো সাহায্য পাবে এবং প্রকৃতির বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করবে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়াটারকিপার অ্যালায়েন্সের কার্যনির্বাহী সদস্য ও বাপার সাবেক সাধাারণ সম্পাদক পরিবেশকর্মী শরিফ জামিল সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগামীতে কপ-৩১ আয়োজন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে দুটি দেশ একইদিন কপ আয়োজন নিয়ে নিজেদের আগ্রহ থেকে সরে গেছে। এখন বাকি আছে হোস্ট কান্ট্রি হিসেবে ব্রাজিল। কিন্তু ব্রাজিল তো এবারই ফ্লপ। বরং, এই কপ থেকে কোনো ফলাফল আসবে কি না, সেটা নিয়েই চিন্তিত ব্রাজিল।’

তিনি বলেন, ‘কোনো নতুন দেশ কপ আয়োজনে অপারগতা প্রকাশ করলে হোস্ট কান্ট্রি তা আয়োজনের ঘোষণা দিতে পারে। কিন্তু্ এ ক্ষেত্রে সেরকম সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ফলে কপের সদর দফতর রয়েছে যে দেশে, সেই দেশ পরবর্তী কপ আয়োজন করতে পারে বলে সংস্থার গঠনতন্ত্রে উল্লেখ রয়েছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সেই দেশটি হলো জার্মানি। এখন জার্মানি কপ আয়োজনে কতটুকু আগ্রহ দেখাবে, নাকি অন্য কোনো দেশ এগিয়ে আসবে সেটিই এখন দেখার বিষয়। আর এ জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত। কারণ, ওইদিন কপ-৩০ আয়োজনের সমাপ্তি। আর সেদিনই ঘোষণা হবে পরবর্তী কপের গন্তব্য।’

এদিকে কপ কনফারেন্স সেন্টার ঘুরে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়া ও তুরস্ক একইসঙ্গে প্যাভিলিয়ন নিয়েছে। আর পাশাপাশি দুটি রাষ্ট্র একইদিনে কপ-৩১ আয়োজনের আগ্রহ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ায় অন্যান্য দেশ হতাশায় ভুগছে। আফ্রিকা ও আটলান্টিক মহাসাগরের কিনার ঘেঁষা দেশ নাইজেরিয়ার পরিবেশবিদ ও সাংবাদিক কেমেলা ইসা সারাবাংলাকে বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোর একতরফা কার্বন নিঃসরণের ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলো সামনে এগোতে পারছে না। তার ওপর কপ আয়োজন নিয়ে সংশয় দেখা দিলে আলোচনার জায়গাটুকুও বন্ধ হয়ে যায়। বড় দু’টি রাষ্ট্রের এভাবে একইদিনে কপ আয়োজনের আগ্রহ থেকে সরে আসা ভালো চোখে দেখছে না কেউ।’ তাদের এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা উচিত বলেও মনে করেন ইসা।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম
বিজ্ঞাপন

আরো

উজ্জল জিসান - আরো পড়ুন
সম্পর্কিত খবর