রংপুর: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন-২০২৫-এর তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পর প্রথমবারের মতো এই নির্বাচনে ভোট হবে ২৯ ডিসেম্বর। নির্বাচনে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে নতুন আচরণবিধিতে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাতে ব্রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. শাহাজামানসহ ৫ কমিশনারের সই করা নির্বাচনি তফসিলের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ভোটার তালিকা প্রস্তুতির কাজ শুরু হবে ২২ নভেম্বর খসড়া প্রকাশের মাধ্যমে। আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি হবে ২৪ নভেম্বর দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত, এবং চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে ২৬ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হবে ৩০ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর (সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা), দাখিলের তারিখ ৩ ডিসেম্বর।
প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ ৬ ডিসেম্বর, আপত্তি নিষ্পত্তি ৭-৮ ডিসেম্বর, এবং প্রত্যাহারের সুযোগ ৯ ডিসেম্বর (সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা)। ডোপ টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে ১৩ ডিসেম্বর, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ২৯ ডিসেম্বর। একইদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণের পর গণনা ও ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শাহজামানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের কমিশনে রয়েছেন আমির শরীফ, মাসুদ রানা, ড. প্রদীপ কুমার সরকার, ড. মোহসিনা আহসান এবং হাসান আলী। গত ৪ নভেম্বর গঠিত এই কমিশন দ্রুত আচরণবিধি প্রস্তুত করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে তফসিল ঘোষণা করেছে। আচরণবিধিতে নিয়ম মেনে না চললে শাস্তির বিধান রয়েছে। যেমন- প্রচারে অতিরিক্ত ব্যয় বা সাম্প্রদায়িকতা অযোগ্য ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনে এমফিল, পিএইচডির ছাত্ররা অংশ নিতে পারবেন না।
এর আগে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে শুরু অবস্থান কর্মসূচি। শিক্ষার্থীরা জানান, আমরণ অনশনের হুমকি ও আন্দোলনের ফলে এই দীর্ঘস্থায়ী দাবি পূর্ণতা লাভ করেছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহেই নির্বাচন হওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট, তবে নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
গত আগস্টে আমরণ অনশনের মাধ্যমে উপাচার্যের নভেম্বরে নির্বাচনের আশ্বাস পাওয়ার পরও বিলম্বের কারণে ক্ষোভ ছড়িয়েছিল। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বেরোবিতেও এখন গণতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির সূচনা হচ্ছে।
এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে সব প্রস্তুতি চলছে। এই ঘোষণা ক্যাম্পাসে নতুন উদ্যম সঞ্চার করেছে, যা ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়াতে পারে।